• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

আসন রফাতেই ভেঙে খান-খান ‘ইন্ডিয়া’

বিরোধ কংগ্রেস বনাম বাকিদের দিল্লি, ৩১ অক্টোবর– দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপি তাড়াতে ২৮টি ছোট-বড় দল নিয়ে বিরোধীরা গঠন করে ‘ইন্ডিয়া’ জোট৷ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ‘ইন্ডিয়া’-র ছাতার তলায় আসতে দেখা যায়৷ চিরশত্রু সিপিএম থেকে শুরু করে কংগ্রেসকেও৷ কিন্তু জোট বাধলেও বেশ কয়েকটি দল যে কখনওই একে অপরের সঙ্গে সমঝোতায় আসবে না তা পরিষ্কার হয়ে

বিরোধ কংগ্রেস বনাম বাকিদের
দিল্লি, ৩১ অক্টোবর– দিল্লির মসনদ থেকে বিজেপি তাড়াতে ২৮টি ছোট-বড় দল নিয়ে বিরোধীরা গঠন করে ‘ইন্ডিয়া’ জোট৷ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ‘ইন্ডিয়া’-র ছাতার তলায় আসতে দেখা যায়৷ চিরশত্রু সিপিএম থেকে শুরু করে কংগ্রেসকেও৷ কিন্তু জোট বাধলেও বেশ কয়েকটি দল যে কখনওই একে অপরের সঙ্গে সমঝোতায় আসবে না তা পরিষ্কার হয়ে যায় ‘ইন্ডিয়া’-র প্রথম বৈঠকেই৷ দিল্লির শাসকদল আপ প্রধান কেজরিওয়াল দিল্লি রাজ্যপাল বনাম আপ প্রশ্নে কংগ্রেসের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে প্রেস কংফারেন্সে থাকতে অস্বীকার করেন৷ তারপর বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বের প্রশ্ন তো ছিলই৷
এরপর বাংলায় আসন সমঝোতা নিয়ে ফাটল দেখা যায় কংগ্রেস-তৃণমূলেও৷ অন্যদিকে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির ইন্ডিয়ায় থাকার বার্তা প্রকাশ্যেই মানতে অস্বীকার করে বাংলার সিপিএম৷ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটিও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আসন সমঝোতায় তৃণমূলের সঙ্গে কোন সমঝোতা নয়৷
ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যত নিয়ে রাজনীতিবিদদের বেশিরভাগকেই সেই সময় ভবিষ্যতবানী করতে যায়, আসনেই ভাঙবে ইন্ডিয়া৷ আর তাই সত্যি হল৷ আসন সমঝোতার প্রশ্নে ভেঙে খান-খান ‘ইন্ডিয়র’৷ বর্তমানে ৫ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের প্রথম দফা শুরুর আর মাত্র আট দিন বাকি৷ ৭ নভেম্বর ছত্তীসগডে় প্রথম দফার ভোট৷ ২৫ নভেম্বরের মধ্যে এই সব ক’টি রাজ্যেই ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার কথা৷ কিন্ত্ত ‘ইন্ডিয়া’ জোটের শরিকদের মধ্যে আসন নিয়ে এখনও বনিবনা হচ্ছে না৷ উল্টে দীর্ঘদিনের সঙ্গী বাম দলগুলির সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধ চরমে উঠেছে৷ একাধিক জোট নেতার মতে, কংগ্রেস ধরেই নিয়েছে, মিজোরাম বাদে বাকি চার রাজ্যে তারা ক্ষমতায় আসছে৷ তাই শরিকদের উপেক্ষা করছে৷ ভোটমুখী রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, ইন্ডিয়া জোট তৈরি হয়েছে লোকসভা ভোটের জন্য৷
অন্যদিকে, সমাজবাদী পার্টি, জনতা দল ইউনাইটেড, সিপিএম, সিপিআইয়ের বক্তব্য, বিগত বিধানসভা নির্বাচনগুলিতেও কংগ্রেস অন্য দলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করেছে৷ তাদের মধ্যে অন্যতম হল সিপিএম ও সিপিআই৷ রাজস্থানে পাঁচ বছর আগে সিপিএমের তিন বিধায়ক কংগ্রেসের পাশে ছিল৷ রাজ্যে কৃষক আন্দোলনেও দুই দল একসঙ্গে থেকেছে৷ কিন্ত্ত রাজ্য কংগ্রেস এবার চাহিদা মতো আসন দিতে চাইছে না৷ মধ্যপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে কংগ্রেসের বিরোধকে রীতিমত প্রচারের বিষয় করে তুলেছে বিজেপি৷
পদ্ম শিবির বলছে, ভোট আসতেই কংগ্রেসের জমিদারি মেজাজ প্রকাশ পেয়ে গেছে৷ মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি কমলনাথ কিছুতেই সমাজবাদী পার্টিকে পাঁচটি আসন ছাড়তে নারাজ৷ সামান্য ভোট কেটে দিলেই ওই আসনগুলিতে কংগ্রেসের ভরাডুবি হবে৷সোমবার দিল্লিতে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, রাজস্থান, মধ্যরপ্রদেশ ও ছত্তীসগডে় তারা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে৷
রাজস্থানে ১৭টি এবং মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগডে় যথাক্রমে তিন ও চারটি আসনে লড়াই করবে৷ তেলেঙ্গানা নিয়ে সিপিএম এখনও সিদ্ধান্ত জানায়নি৷ রাজস্থান ও ছত্তীসগডে় সিপিআই লড়াই করবে যথাক্রমে ১৭ ও ২২টি করে আসনে৷ এদিকে, পাঁচ রাজ্যেই বেশিরভাগ আসনে প্রার্থী দিয়েছে আম আদমি পার্টি৷ আপ চুটিয়ে প্রচার করছে৷ বেশিরভাগ আসনে তাদের লড়াই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে৷ আসরে আছে শরদ পাওয়ারের এনসিপি’ও৷ পাওয়ার গত সপ্তাহে দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং রাহুল গান্ধির সঙ্গে বৈঠক করেন৷ সেখানে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস নেতৃত্বকে আরও নমনীয় হতে অনুরোধ করেন তিনি৷ পাওয়ারের বক্তব্য, তাহলে লোকসভায় আসন সমঝোতা আরও সহজ হয়ে যাবে৷ সোমবার একই কথা বলেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি৷
ভোটমুখী রাজ্যের কংগ্রেস নেতারা আসন ছাড়তে নারাজ, অভিযোগ করেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক৷ দিল্লিতে ইয়েচুরির সাংবাদিক বৈঠকের পর কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ টুইট করে আক্ষেপ করেছেন, বিধানসভার ভোটে ইন্ডিয়া জোটের মধ্যে বোঝাপড়া না হওয়ায়৷