• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

কেরলে বিস্ফোরণে মৃত ১, বিজয়নকে ফোনে এনআইএ তদন্তের নির্দেশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর 

তিরুঅনন্তপুরম, ২৯ অক্টোবর –  কেরলের কালামাসেরির এক কনভেনশন সেন্টারে জোরালো বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। আহত হয়েছেন প্রায় ২৩ জন। আহতদের কালামাসেরি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।  পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণ ঘটে জামরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে। এর্নাকুলাম জেলার কালামাসেরির এই বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা

তিরুঅনন্তপুরম, ২৯ অক্টোবর –  কেরলের কালামাসেরির এক কনভেনশন সেন্টারে জোরালো বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। আহত হয়েছেন প্রায় ২৩ জন। আহতদের কালামাসেরি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।  পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণ ঘটে জামরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে। এর্নাকুলাম জেলার কালামাসেরির এই বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কেরল পুলিশ এবং এনএসজি-র সদস্যরাও। তদন্তকারীদের অনুমান, একটি টিফিন কৌটোর মধ্যে  বিস্ফোরক  রাখা ছিল। স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ৯টা নাগাদ প্রথম বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কনভেনশন সেন্টারটি। তার পর আরও দু’টি বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানা যায়।  এদিকে বিস্ফোরণের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। 

বিস্ফোরণের ঘটনায় এনআইএ ও এনএসজি-কে তদন্তের নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঘটনার পড়ি তিনি কথা বলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারায় বিজয়নের সঙ্গে। বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে  জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ এবং এনএসজি। এনআইএ-র চার সদস্যের একটি দল কালামাসেরিতে পৌঁছেছে। প্রয়োজন বুঝে এনআইএ-র আরও প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে যেতে পারেন। পৌঁছেছে এনএসজির আট সদস্যের একটি দলও।  বিস্ফোরণের কারণ খুঁজতে ইতিমধ্যেই ওই এলাকায় পৌঁছেছেন দুই কেন্দ্রীয় সংস্থার প্রতিনিধিরা। ওই দুই সংস্থা সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের কারণ খতিয়ে দেখতে শীঘ্রই সেখানে নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু হবে।

পুলিশ সূত্রে খবর, বিস্ফোরণের খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। শুরু হয় উদ্ধার অভিযান।  কনভেনশন হলের ভিতরে বিভিন্ন জায়গায় আগুন লেগে যায়। সেখানে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন।  বিশাল বাগানের শিখা ছড়িয়ে পড়তে থাকে। দমকল কর্মীরা আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বহু মানুষ কনভেনতিন সেন্টারের মসামনে জড়ো হয়ে যান।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তুলনায় কম তীব্রতার বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল। বিস্ফোরণস্থল থেকে ব্যাটারি এবং বৈদ্যুতিক তারের টুকরো পাওয়া যায়। তবে এই বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আরও তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।কেরল পুলিশের ডিজি দরবেশ সাহেব জানান, তদন্তে সব রকম সম্ভাবনার কথাই মাথায় রাখা হচ্ছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। তিন দিন ধরে কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠান চলছিল। রবিবারই ছিল অনুষ্ঠানের শেষ দিন। রবিবার সেখানে প্রায় দু’হাজার জন ছিলেন বলে দাবি। সকাল ৯টা নাগাদ প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে। তার পর আরও দু’টি বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানা যায়। কনভেনশন সেন্টারটি ঘিরে রেখেছে পুলিশ। চলছে উদ্ধারকাজ।

 তদন্তকারীদের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এক সময় কোচি লাগোয়া ওই এলাকা অধুনা নিষিদ্ধ সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া-র ঘাঁটি ছিল। যদিও অতীতে পিএফআই কখনও হিংসাত্মক ঘটনায় আইইডি ব্যবহার করেনি। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে , ইম্প্রোভাইজ়ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস ব্যবহার করা হয়েছিল। তাই বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল বেশি।

ইতিমধ্যেই বিস্ফোরণে জখমদের চিকিৎসার সামগ্রিক ব্যবস্থা করতে স্বাস্থ্য দফতরকে নির্দেশ দেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। সব হাসপাতালকে তৎপর থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়। ছুটিতে থাকা চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্রুত কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। খোঁজখবর নিচ্ছি। শীর্ষ আধিকারিকদের ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে  দেখা হচ্ছে। ডিজিপির সঙ্গে কথা বলেছি। তদন্তের পর সব জানা যাবে।’’

শনিবারই উত্তর কেরলের মালপ্পুরমে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা দেন প্যালেস্তিনীয় সংগঠন হামাসের নেতা খালেদ মাশাল। জামাত-ই-ইসলামির যুব শাখা ‘সলিডারিটি ইউথ মুভমেন্ট’ ওই সভার আয়োজন করে বলে প্রকাশিত খবরে দাবি। অভিযোগ, ‘সেভ প্যালেস্তাইন’ শীর্ষক ওই সভায় খোলাখুলি ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক প্রচার চালানো হয়। তার পরের দিনই এই বিস্ফোরণের ঘটনায়  সরগরম হয়ে ওঠে কেরলের রাজ্য রাজনীতি।

এদিকে কেরলে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় দিল্লি এবং মুম্বইয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। রাজধানীর জনবহুল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ায় দিল্লি পুলিশ। এক বিবৃতিতে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখছে দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল।সতর্কতা জারি করেছে মুম্বই পুলিশও। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কঠোর করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।