কংগ্রেস বলছে, ‘মোদি সরকারে মাফিয়া স্টাইল’
দিল্লি, ১২ অক্টোবর– দেশে শুধু কেলেঙ্কারি আর কেলেঙ্কারি৷ সেই তালিকায় এবার আয়ুষ্মান ভারত এবং দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প৷ এই মেগা কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁস হল কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট আসতেই ৷ এই রিপোর্ট হাতে আসা মাত্রই ব্যবস্থা নিয়েছে মোদি সরকার৷ তবে কেলেঙ্কারির বিরুদ্ধে নয় সেই তিন অফিসারের বিরুদ্ধে যাদের নেতৃত্বে এই কেলেঙ্কারির রিপোর্ট সামনে এসেছে৷ জানা গিয়েছে, মোদি সরকারের জনপ্রিয় দুই প্রকল্পের অনিয়ম সামনে এনে ইন্ডিয়ান অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস সার্ভিসের সেই পদস্থ তিন অফিসারকে বুধবার অন্যত্র বদলি করে দিয়েছে সরকার৷ এমনটাই দাবি করেছে কংগ্রেস৷ হাত শিবির এই সিদ্ধান্তকে ‘মোদি সরকারের মাফিয়া স্টাইল’ বলে বর্ণনা করে প্রশ্ন তুলেছে কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল৷ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের বক্তব্য, ‘সিএজি রিপোর্টে পরিকাঠামো এবং সামাজিক স্কিমে কেলেঙ্কারির উল্লেখ আছে৷ এখন, আয়ুষ্মান ভারত এবং দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে কেলেঙ্কারির রিপোর্ট করার দায়িত্বে থাকা তিন সিএজি অফিসারকে মোদী সরকার দুর্নীতি আড়াল করতে বদলি করে দিয়েছে৷’
কেন্দ্র সরকারের প্রকল্প দ্বারকা এক্সপ্রেসও তৈরিতে যে ১৪০০ শতাংশ অতিরিক্ত খরচ হয়েছে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে টেন্ডার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সিএজি৷ অন্যদিকে, আয়ুষ্মান ভারত বিমা প্রকল্পে বেশ কয়েক লাখ ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির নামে ক্ষতিপূরণের অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে সিএজি৷ সেই সঙ্গে তারা জানতে পারে একটি টেলিফোন নম্বরে সাডে় সাত লাখ মানুষের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে৷ সব মিলিয়ে প্রকত উপকৃতর সংখ্যা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে সরকারি সংস্থাটি৷ সিএজি’র কাজ হল সরকারি দফতরের আয়-ব্যয়, হিসাব এবং প্রকল্পে নিয়মকানুন অনুসরণের বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা৷ এই সংস্থার তোলা প্রশ্নের জবাব সংসদে দিতে বাধ্য সরকার৷
২০১১-১২ সালে তৎকালীন মনমোহন সিং সরকারের বিরুদ্ধেও একাধিক বিস্ফোরক রিপোর্ট দিয়েছিল সিএজি৷ তৎকালীন সিএজি বিনোদ রাই দাবি করেছিলেন, কয়লা খনি লিজ দেওয়াতে অনিয়মে এক লাখ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে সরকারের৷ আরও কিছু প্রকল্পেও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিল সিএজি৷ যদিও পরবর্তীকালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এক মামলায় সিএজি’র ওই রিপোর্টকে নসাৎ করে দেয়৷ তার জেরে তৎকালীন সিএজি বিনোদ রাই প্রকাশ্যে ক্ষমা চান৷ যদিও ততদিনে সরকারের পালা বদল ঘটে গিয়েছে৷ সিএজি রিপোর্ট হাতিয়ার করে ২০১৪-র লোকসভা ভোটে বাজিমাৎ করেন নরেন্দ্র মোদী৷ কংগ্রেসের অভিযোগ, সেই মোদিই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সিএজি’র গুরুত্ব হ্রাস করে দিয়েছেন৷ এখন অনিয়ম ধরা অফিসারদের বদলি করে দেওয়া হচ্ছে৷