দিল্লি, ৭ অক্টোবর– একসময় ছিল যখন যক্ষ্মা মানেই মহামারী। কারুর যক্ষা হয়েছে জানলে ঘরের মানুষরাই রোগীকে এক ফেলে পালাতে। কিন্তু এখন চিকিৎসাপদ্ধতি অনেক উন্নত। মানুষের ভাবনা-জানার পরিধি অনেক উন্নত। কাজেই যক্ষ্মা বা টিউবারকিউলোসিসের ভয় তেমনভাবে নেই। কিন্তু তাই বলে ভুলে চলবে না যে যক্ষ্মা নিয়ে সচেতনতার অভাব ও অবহেলাই বিপদ ডেকে আনতে পারে। সেরকমটাই তো বলছে সমীক্ষা। সম্প্রতি এক সমীক্ষা বলছে ৪০ল শতাংশ ভারতীয় ভুগছে ক্ষয়রোগ অর্থাৎ যক্ষায়। যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ মারা যান। সমীক্ষা বলছে, ২০২১ সালে গোটা দেশে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়েছেন ২১ লক্ষ ৪০ হাজার জন। ২০২০ সালের থেকে ১৮ শতাংশ বেশি।
মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামক একটি ব্যাক্টেরিয়া মানবদেহে যক্ষ্মা বা টিবি রোগ তৈরি করে। ভারতে প্রতি বছর বহু মানুষের মৃত্যু হয় এই রোগে। প্রায় ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রে ফুসফুসে এই সংক্রমণ হলেও, বিশেষজ্ঞদের মতে যে কোনও অঙ্গেই হতে পারে যক্ষ্মা।
পিডি হিন্দুজা হাসপাতাল অ্যান্ড মেডিক্যাল রিসার্চের কনসালট্যান্ট পালমোনোলজিস্ট ডা. ল্যান্সলট পিন্টো বলছেন, ভারতীয়দের মধ্যে যক্ষ্মার প্রকোপ খুব বেশি। হাঁচি-কাশির মধ্যে দিয়ে ছোট ছোট কণার আকারে এই ব্যাকটেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে। কাজেই রোগীর কাছাকাছি থাকলে অনেকটাই বেড়ে যায় এই রোগের ঝুঁকি। শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে গেলে হতে পারে রোগ সংক্রমণ। ফলে যক্ষ্মা রোগীর বাড়ির লোক এবং চিকিৎসক ও নার্সদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে অনেকটাই।
সরকারের তরফ থেকে ২০২৫ সালের মধ্য ভারত থেকে এই রোগ নির্মূল করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সম্প্রতি এই ব্যাকটেরিয়া এমন একটি রূপ দেখা দিয়েছে যা কাবু হচ্ছে না ওষুধে। করোনার দু’বছরে যক্ষ্মা অনেকটা কমে গেলেও, ইদানীংকালে ফের বাড়তে শুরু করেছে। আর উপসর্গ সঠিকভাবে চেনা না থাকায়, রোগ হলেও তা বুঝতে পারছেন না অনেকে। ফলে রোগ তলে তলে বাড়তে থাকছে শরীরে।