ইসলামাবাদ: রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে আর্থিক সংকট। দুইয়ে ধুঁকছে পাকিস্তান। কর্মসংস্থান পৌঁছেছে শূন্যে। তার উপর নেমে এসেছে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির খাঁড়া। এই পরিস্থিতিতে আটা-ময়দার বস্তা লুট করার মতো চরম পদক্ষেপ নিতেও বাধ্য হয়েছেন দারিদ্র্য ও ক্ষুধার সঙ্গে যুঝতে থাকা আম পাকিস্তানিরা। বিশ্বব্যাঙ্কের সহায়তা পাওয়ার পরও ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে, দারিদ্র্যের মোকাবিলায় সাধারণ মানুষ এখন কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর মানুষের এই অসহায়তার সুযোগ নিয়ে একদল চোরাকারবারীরা পরিণত হয়েছে কসাইয়ে। একেকটি কিডনি বিক্রি হচ্ছে ১ কোটি টাকায়। এই ভাবে শয়ে শয়ে গরিব পাকিস্তানির কিডনি পাচার হয়ে যাচ্ছে বিদেশে।
সম্প্রতি, এই অঙ্গ চোরাচালান চক্রের সন্ধান পেয়েছে পাক পুলিশ। সাংবাদিক সম্মেলন করে তারা জানিয়েছে, গরিব মানুষের শরীর থেকে কিডনি অপসারণ করা হচ্ছে। বিদেশে বহু মানুষের কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন। তাদের কাছে এই কিডনিগুলি বিক্রি করা হচ্ছে ৩০ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকায়। ফাওয়াদ মুখতার নামে জনৈক দুষ্কৃতী এই চক্রের মাথা বলে দাবি পাক পুলিশের। তার নেতৃত্বে এই চক্র অন্তত ৩২৮ জনের কিডনি অপসারণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর আগে পাঁচবার বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এই ফাওয়াদ মুখতারকে। কিন্তু, দুঃখের বিষয় তাঁর সঙ্গে প্রভাবশালীদের সুসম্পর্ক রয়েছে। সেই সুসম্পর্ককে করাজে লাগিয়ে প্রতিবারই সে জামিন পেয়েছে।
এই চোরাচালান চক্রের ৮ সদস্যকে সম্প্রতি গ্রেফতার করেছে পাকিস্তানের পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই ফাওয়াদ মুখতার এবং তার অঙ্গ চোরাচালান চক্র সম্পর্কে জানা গিয়েছে। পাক পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্র ধনী বিদেশিদের কাছে কিডনি বিক্রি করত। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করত। মূলত পাক পঞ্জাব প্রদেশ এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে এই চক্রের জাল বিছানো আছে। পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে দরিদ্র মানুষদের অর্থের লোভ দেখিয়ে ফাঁদে ফেলত চোরাকারবারীরা।