ইসলামাবাদ, ২৯ সেপ্টেম্বর– পাকিস্তানে মিছিলের পর এবার মসজিদে আরেকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এক দিনে পাকিস্তানে আঘাত হানা দ্বিতীয় সন্ত্রাসী হামলা। প্রথম হামলাটি হয় বেলুচিস্তানের মাস্তুং জেলায়। সেখানে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ৫২ জন নিহত এবং ৫০ জনের বেশি আহত হয়। আর এরপরই ফের হামলা। এবার এক মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৪ জন।
শুক্রবার বালুচিস্তানের মাসতাং বিভাগে জুম্মার নামাজ শেষে মিছিলের জন্য জড়ো হওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।
এ হামলার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে ঘটনার সঙ্গে জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তান জড়িত থাকতে পারে।
বোমা হামলায় ৫২ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি সংবাদমাধ্যমটিকে নিশ্চিত করেছেন বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ডিএইচও) আব্দুল রাজ্জাক শাহী।
এর আগে স্থানীয় নওয়াব ঘোস বখশ রাইসানি মেমোরিয়াল হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী ডাক্তার সাঈদ মিরওয়ানি ৩৪ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন। এই হাসপাতালেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে বেশিরভাগ মরদেহ। আর মাসতাং বিভাগীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিছু মরদেহ। আহতদেরও এই হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে সিটি স্টেশন হাউজ অফিসার (এসএইচও) মোহাম্মদ জাভেদ লেহরি জানিয়েছেন, এটি একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা ছিল।
মাসতাংয়ের সহকারী কমিশনার (এসি) আত্তাউল মুমিন জানান, আলফালাহ সড়কের মদিনা মসজিদের কাছে ঈদে মিলাদুন্নবীর মিছিলের জন্য যখন মানুষ জড়ো হন তখনই বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
আহমেদ বলেন, দুইজন আত্মঘাতী বোমা হামলায় জড়িত ছিল। একজন থানার গেট লক্ষ্য করে এবং অন্যজন মসজিদের ভেতরে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়।
খাইবার পাখতুনখোয়া মুখ্যমন্ত্রী আজম খান শহরের সব হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। কারণ তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে বিস্ফোরণের বিষয়ে প্রতিবেদন চেয়েছিলেন।
বিস্ফোরণটি মসজিদের কাছে ঘটে যেখানে লোকেরা ঈদে মিলাদুন নবী উপলক্ষে জড়ো হয়েছিল।
গত এক বছর ধরে পাকিস্তানে ব্যাপক আকারে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে বেলুচিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া শান্তির অবনতি ঘটানোর জন্য নিরাপত্তা বাহিনী এবং বেসামরিকদের লক্ষ্য করে জঙ্গি হামলা বেড়েছে।
এই মাসের শুরুর দিকে, পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (পিআইসিএসএস) দ্বারা সংকলিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে আগস্ট মাসে দেশ জুড়ে জঙ্গি হামলায় তীব্র বৃদ্ধি রেকর্ড করা হয়েছে এবং ৯৯টি সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটেছে।
রিপোর্ট অনুসারে, এই হামলার ফলে ১১২ জন মারা গেছে এবং ৮৭ জন আহত হয়েছে। বেশিরভাগ হামলাই নিরাপত্তা বাহিনী এবং বেসামরিকদের লক্ষ্য করে।