কাবেরী নদীর জলের ‘বড় অংশ’ তামিলনাড়ুকে দেওয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে শুক্রবার ১২ ঘণ্টা কর্নাটকে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। কন্নড়পন্থী সংগঠন এবং রাজ্যের কৃষক সংগঠনগুলি এই ধর্মঘটকে সমর্থন জানায়। কানাড়া ওক্কাটা নাম একটি সংগঠনের ডাকা এই ধর্মঘটে এদিন সকাল থেকে শুধু বিমান পরিষেবা নয়, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। বাড়ি থেকে বেরোতেই পারেননি মানুষ। বের হলেও গন্তব্যে পৌঁছতে প্রচুর সমস্যা ভোগ করতে হয়। সকাল থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন জায়গায়। বিক্ষোভ হবে আগাম আঁচ করে কর্ণাটকের স্কুল ও কলেজ ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। বেঙ্গালুরু শহর-সহ বিভিন্ন জায়গায় ১৪৪ ধারায় জারি করা হয়। বিভিন্ন সংগঠনের ৫০ জনেরও বেশি প্রতিবাদীকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে পুলিশ। মাইসুরু, কোদাগু, মান্ডিয়া, চমরাজানগর ও রামনগরার বহু অংশেই কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে।
আগষ্টের প্রথমে তামিলনাড়ু সরকার কর্নাটক থেকে প্রতিদিন কাবেরীর ২৪ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার জন্য আদালতে আর্জি জানায়। এরপর আদালতে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয় কর্নাটক সরকার। আগে কর্নাটক সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, তামিলনাড়ুর কাবেরী উপত্যকায় পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে এবং চাষাবাদের জন্য কিছু পরিমাণ জল ছাড়তে তারা প্রস্তুত। কিন্তু কর্নাটক যে পরিমাণ জল ছাড়ার কথা জানিয়েছিল তাতে সন্তুষ্ট হয়নি তামিলনাড়ু।
সম্প্রতি কাবেরী জল বণ্টন পর্ষদ কর্নাটককে নির্দেশ দিয়েছে তামিলনাড়ুকে ১৫ দিনের জন্য পাঁচ হাজার কিউসেক জল ছাড়তে । এই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে চায়নি সুপ্রিম কোর্ট। তার পরেই নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়েছে কর্নাটকে। কম বৃষ্টির কারণে এমনিতেই কর্নাটকের জলাধারগুলিতে জলাভাব দেখা দিয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কৃষকদের স্বার্থ উপেক্ষা করা হচ্ছে। এই অভিযোগ বিজেপি, জেডিএস-এর মতো কর্নাটকের বিরোধী দলগুলির।
প্রসঙ্গত, কাবেরী নদীর জলবন্টন নিয়ে তামিলনাড়ু এবং কর্নাটকের বিবাদ অবশ্য নতুন নয়। দক্ষিণ ভারতের এই নদীটির উৎপত্তি কর্নাটকে। এরপর তামিলনাড়ুতে প্রবেশ করে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। গোদাবরী, কৃষ্ণার পর দক্ষিণ ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম নদী কাবেরী।
এদিকে শুক্রবার বিমানবন্দরে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীরা বিমানবন্দরের ভিতরে ঢুকে পড়েন। বিমানে উঠে তাঁরা বিক্ষোভ দেখতে শুরু করেন। পুলিশ পাঁচজনকে আটক করে। বিমানবন্দরে অনেকেই পৌঁছতে পারেননি। বাতিল করতে হয় অধিকাংশ বিমান। বিমানবন্দরের বাইরেও ছিলেন বহু বিক্ষোভকারী। সেখানে প্রায় ২০ জনকে আটক করা হয় বলে জানা গেছে।