অটোয়া, ২১ আগস্ট – কানাডায় খুন হল পঞ্জাবের মাফিয়া সুখদুল সিং গিল ওরফে সুখা দুনে। কানাডায় খালিস্তানি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিল এই গ্যাংস্টার। কানাডার উইনিপেগে অজ্ঞাতপরিচয় হামলাকারীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় সুখা দুনের শরীর। পাঞ্জাবে তোলাবাজি, খুনের চেষ্টা ও খুনের মামলায় দুনে মোস্ট ওয়ান্টেড ছিল। পাঞ্জাবের পুলিশ আধিকারিকদের মতে, দুনে ২০১৭ সালে কানাডায় পালিয়ে যায়। তখন থেকেই কানাডায় বসেই তোলাবাজির চক্র চালানোর অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। এমনকী সন্ত্রাসমূলক কাজেও দুনে জড়িত ছিল। সম্প্রতি এনআইএ সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে যুক্ত চল্লিশ জনের যে তালিকা প্রকাশ করে, সেই তালিকাতেও নাম ছিল দুনের। এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে এই মৃত্যুর দায় স্বীকার করেছে জেলবন্দি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই।
ভারতের সঙ্গে কানাডার বিরোধের মধ্যেই কানাডায় খুন হয়েছে খালিস্তনি জঙ্গি সুখদুল সিং ওরফে সুখা দুনে। বামবিহা গ্যাংয়ের হয়ে দুনে কাজ করছিল বলে অভিযোগ। লরেন্স বিষ্ণোই এবং গোল্ডি ব্রার গ্যাংয়ের সঙ্গে তার শত্রুতা ছিল। দুনে কবাডি খেলোয়াড় সন্দীপ নাগ্গাল আম্বিয়ান খুনেও অভিযুক্ত সে । সন্দীপ ২০২২ সালের মার্চে পঞ্জাবের মালিয়ান গ্রামে একটি কবাডি ম্যাচ চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন। পাঞ্জাবে খুন-সহ একাধিক গুরুতর অপরাধে যুক্ত এই অপরাধী দেশ থেকে পালিয়ে কানাডায় আশ্রয় নিয়েছিল। ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর কানাডার উইনিপেগ এলাকায় বুধবার সন্ধ্যায় গোষ্ঠী সংঘর্ষে নিহত হয় এই গ্যাংস্টার।
এদিকে যে হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারতের দিকে আঙুল তুলেছেন সেও গোষ্ঠী বিবাদেই খুন হয়। গত জুনে কানাডার সারা এলাকায় একটি গুরুদ্বারের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় নিজ্জর। ১৫টি বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাঁর শরীর।
কূটনৈতিক মহলের খবর, দুনের হত্যাকাণ্ড প্রমান করল কীভাবে কানাডা ভারতের পলাতক অপরাধীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠেছে। সাতটি গুরুতর অপরাধ নিয়ে তদন্ত ও মামলা চলছিল দুনের বিরুদ্ধে। কাগজপত্র জাল করে সে ২০১৭ সালে কানাডা চলে যায়। সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, পাঞ্জাবের কম-বেশি ২৯জন গ্যাংস্টার বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। বেশিরভাগকেই আশ্রয় দিয়েছে কানাডা। ভারত অনেকদিন ধরেই বলে আসছে, এই সব দুষ্কৃতীদের কানাডায় খালিস্তানপন্থী বিভিন্ন সংগঠন আশ্রয় দিচ্ছে। তথ্য-প্রমাণ দিয়ে কানাডা সরকারকে ব্যবস্থা নিতেও বলেছে নয়া দিল্লি। স্বভাবতই কানাডার মাটিতে ভারতীয় গ্যাংস্টার হত্যাকাণ্ডে অস্বস্তি বাড়ল ট্রুডোরই।খালিস্তানি নেতার বিরুদ্ধে হত্যা সহ মোট ২০টি মামলা রয়েছে । তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র মোস্ট ওয়ান্টেডের তালিকায়ও ছিল মৃত খালিস্তানি নেতা।
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে সুখা দুনের মৃত্যুর দায় নিয়েছে লরেন্স বিষ্ণোই। ফের খালিস্তনি জঙ্গি খুন ও বিষ্ণোইয়ের দায় নেওয়া দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল।