• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

মণিপুরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে ফের প্রাণ হারালেন ৩ জন , সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সুরক্ষার মেয়াদ বাড়ল সাংবাদিকদের 

ইম্ফল, ১২ সেপ্টেম্বর – আবার রক্তাক্ত মণিপুর। দুষ্কৃতীদের গুলিতে ফের প্রাণ হারালেন ৩ জন কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ। সেনা মোতায়েন করার পরও হিংসার আগুনে জ্বলছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। গত এক সপ্তাহের মধ্যে আবার প্রাণহানির ঘটনা উদ্বেগের লার্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ কাংপোকপি জেলার কাংগুই এলাকায় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। কাংপোকপি জেলার পুলিশ সুপার থলু রকি জানিয়েছেন,

ইম্ফল, ১২ সেপ্টেম্বর – আবার রক্তাক্ত মণিপুর। দুষ্কৃতীদের গুলিতে ফের প্রাণ হারালেন ৩ জন কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ। সেনা মোতায়েন করার পরও হিংসার আগুনে জ্বলছে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। গত এক সপ্তাহের মধ্যে আবার প্রাণহানির ঘটনা উদ্বেগের লার্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ কাংপোকপি জেলার কাংগুই এলাকায় হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। কাংপোকপি জেলার পুলিশ সুপার থলু রকি জানিয়েছেন, তিন জন কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ গাড়িতে চেপে আসছিলেন। সেই সময় তাঁদের উপর আচমকা গুলি চালানো হয়। তবে গুলির লড়াইয়ের কোনও খবর মেলেনি। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে দেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।” ইম্ফল ওয়েস্ট ও কাংপোকপি জেলায় সন্দেহভাজনদের খুঁজতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ও অসম রাইফেলস।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবারই গুলির লড়াই বাধে মণিপুরে। সূত্রের খবর, সশস্ত্র স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় সেনাবাহিনীর। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় দু’জনের। আহত অন্তত ২০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কুকি ও মেই তেই দুই সম্প্রদায়ের জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে সেনাবাহিনী। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে জমা থাকা হাতিয়ারগুলি সংগ্রহ করছে সেনা। তবে সন্ত্রাস দমন প্রক্রিয়ায় বাধা দিচ্ছে মেইরা পাইবির মতো সংগঠনগুলি। সাধারণ মানুষ বা ‘ভূমিপুত্র’রা নিজ নিজ সম্প্রদায়ের জঙ্গিদের আড়াল করছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত ঘোরাল।  

এদিকে অশান্ত মণিপুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সেখানে যান এডিটর’স গিল্ড অফ ইন্ডিয়ার সাংবাদিকরা।  তাঁদের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী সংঘর্ষ উস্কে দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়।  সোমবার মামলার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে।  এই ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেন দেশের প্রধান বিচারপতি দি ওয়াই চন্দ্রচূড়। পাশাপাশি অভিযুক্ত সাংবাদিকদের সুরক্ষার মেয়াদ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।  মণিপুরের রাজ্য সরকারকে নোটিস দিয়ে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে গিল্ড সদস্যদের ব্যাপারে কোনও দমনমূলক ব্যবস্থা যেন নেওয়া না হয়। তাঁদের ব্যাপারে মণিপুর সরকার জবরদস্তি কোনও ব্যবস্থা নিতে পারে, এই আশঙ্কায় আদালতে আবেদন করেছিলেন গিল্ড সদস্যরা। তাঁদের বিরুদ্ধে এই ধরণের কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করতে কড়া নির্দেশ দিয়েছে তিন বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ। 

সেনাবাহিনী চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানানোয় মনিপুরে যান এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়ার চার জন সাংবাদিক, সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানান ইজিআই পক্ষের আইনজীবী কপিল সিবাল। সেখানে সংবাদমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট ও অনৈতিক রিপোর্ট প্রকাশ করছে , বিষয়টি দেখতে মনিপুরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানায় ভারতীয় সেনাবাহিনী।  এরপরই প্রধান বিচারপতি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘সেনাবাহিনী কেন এডিটরস গিল্ডকে মনিপুরে যেতে বললো ?’ 

এদিন মণিপুর সরকারের আইনজীবী সলিসিটর জেনারেল মেহতা আর্জি জানান, এই মামলা মনিপুরে স্থানান্তর করা হোক।  এদিকে গিল্ডের আইনজীবী কপিল সিবাল মামলাটি দিল্লি হাই কোর্টে নিয়ে যাওয়ার আবেদন জানান। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১৫ সেপ্টেম্বর।  

উল্লেখ্য, পাঁচ মাস ধরে মেই তেই-কুকি জাতিদাঙ্গায় পুড়ছে মণিপুর। প্রায় দিনই সে রাজ্য থেকে সংঘর্ষ ও রক্ত ঝরার খবর মিলছে। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২০০-র কাছাকাছি। আহত বহু। শান্তি ফেরাতে আসরে নামতে হয় সুপ্রিম কোর্টকে। এই প্রেক্ষাপটে মণিপুরে ‘মানবাধিকার হনন’ ও সরকারের ‘অপর্যাপ্ত’পদক্ষেপের অভিযোগ তুলে রিপোর্টে মোদি সরকারকে বিঁধেছেন রাষ্ট্রসংঘের বিশেষজ্ঞরা। নিজেদের ঘর বাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ে রয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। মেই তেই সম্প্রদায়কে তফশিলি উপজাতিভুক্ত করার বিরোধিতা করেছিল কুকিরা।সেই নিয়ে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ থেকে হিংসার আগুন ছড়িয়ে পড়ে যার আঁচে প্রতিনিয়ত দগ্ধ্ হচ্ছে মণিপুর।