দিল্লি, ৯ সেপ্টেম্বর-– জি-২০ মঞ্চ থেকে পারস্পরিক আস্থা ফেরানোর বার্তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মুখে। শনিবার নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মণ্ডপম কনভেনশন সেন্টারে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তৃতায় মোদির দাবি, অতিমারি পরবর্তী বিশ্বের মানুষের বিশ্বাসে ধাবা গেড়েছে । তাঁর কথায়, ‘সেই অবিস্বাসেই ইউক্রেন যুদ্ধ । আমাদের এই আবহ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পারস্পরিক আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।’
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের উপস্থিতিতে মোদির এই মন্তব্য ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। কারণ, আমেরিকা এবং পশ্চিমী দুনিয়ার ধারাবাহিক চাপ সত্ত্বেও রাষ্ট্রপুঞ্জ-সহ কোনও আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব সমর্থন করেনি ভারত। মস্কোর সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগও ছিন্ন করেনি। সেই নীতিতে অটল থাকার বার্তা দিয়েই মোদি বলেন, ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ মন্ত্রেই আস্থাহীনতার সমস্যা কাটিয়ে উঠতে হবে আমাদের।’
অন্যদিকে, মঞ্চে বসে মোদি যখন আস্থা-অনাস্থার বার্তা দিচ্ছিলেন তখন প্রায় সকলেরই নজর যায় জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী ম়ঞ্চের পোডিয়ামে দেশের নাম ‘ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে ইংরেজিতে লেখা ‘ভারত’ । ঘটনাচক্রে, জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে আগত বিদেশি রাষ্ট্রনেতাদের কাছে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর পাঠানো নৈশভোজের যে আমন্ত্রণপত্র ঘিরে বিতর্কের সূচনা, শনিবার রাতেই তার আয়োজন।
ওই আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়েছে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ভারত’। কিন্তু ভারতের রাষ্ট্রপতি কাউকে কোনও চিঠি লিখলে তাতে চিরাচরিত ভাবে লেখা থাকে ‘প্রেসিডেন্ট অফ ইন্ডিয়া’ কথাটি। এই পরিচয়লিপি বদল ঘিরে বিতর্কের আবহেই গত মঙ্গলবার মোদির ইন্দোনেশিয়া সফরের সূচি এক্স (আগের টুইটার)-এর হ্যান্ডলে প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে মোদির পদ লেখা হয়, ‘প্রাইম মিনিস্টার অফ ভারত’।
জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের মঞ্চেই ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রধানের মতোই আফ্রিকান ইউনিয়নের সভাপতিকে স্থায়ী সদস্যপদ দেওয়ার জন্য সওয়াল করেন মোদি । তিনি বলেন, ‘একুশ শতক বিশ্বকে নতুন দিশানির্দেশ দেওয়ার শতক। নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমাদের পুরনো সমস্যাগুলির সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। যখন আমরা কোভিডকে পরাজিত করতে পেরেছি তখন আমরা এই আস্থার ঘাটতির সঙ্কটের বিরুদ্ধেও জয়ী হতে পারব।’