রায়পুর, ২৫ আগস্ট-– গোটা বিশ্বে ভারতের মাথা উঁচু করে দিয়েছে চন্দ্রযান-৩। যদিও বলা ভালো চন্দ্রযানের পেছনে থাকা মানুষগুলির পরিশ্রমেই আজ বিশ্ব ভারতের গুনগ্রাহী। সেই মানুষগুলোর মধ্যে একজন হল মাত্র বছর ২৩ এর ভরত কুমার। জ্বলজ্বল করছে আজ এই মানুষগুলি। কিন্তু আজ এখানে পৌঁছানোর আগে তাঁদের কঠিন পরিশ্রম চোখে জল নানার গল্পই বলে।
ভরতের মত তরুণ বিজ্ঞানীর অক্লান্ত অবদানের কথা সামনে এসেছে সম্প্রতি। তাঁর মেধা ও পরিশ্রম যে শুধু ইসরোকে সমৃদ্ধ করেছে। তিনি ছত্তীসগড়ের চারৌদা শহরের বাসিন্দা, ২৩ বছরের ভরত কুমার।ভরতের বাবা পেশায় ব্যাঙ্কের নিরাপত্তারক্ষী, মা চালান ছোট্ট এক চা-খাবারের দোকান। ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে সেই দোকানেই হাত লাগিয়েছেন ভরত নিজেও। এমনই অভাবী এক পরিবার থেকে উঠে এসে আজ উজ্জ্বল মুখে ইসরোর দরবারে দাঁড়িয়েছেন ভরত।
নুন আনতে পান্তা ফুরানো ঘরের সন্তান ভরতের পড়াশোনার স্বপ্নের পেছনেও রয়েছে যুদ্ধের কাহিনী। চারৌদা শহরের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা ভরতের স্কুলের দয়াতেই শেষ হয়। স্কুল থেকে তাঁর বেতন মকুব করা না হল তিনি আজ এখানে পৌঁছাতেই পারতেন না। তবে স্কুলের মুখ রেখে দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় তুখোড় রেজাল্ট করেছিলেন তিনি। সেই রেজাল্টের জোরেই আইআইটি ধানবাদে পড়তে যান ভরত।
সেই সময়ে তাঁর মেধার খবর পৌঁছয় রায়পুরের এক ধনী ব্যবসায়ীর কাছে। অভাবে শিক্ষা বন্ধ হতে না দিয়ে অরুণ বাগ নামের সেই ব্যবসায়ী এবং তাঁর সুপারিশে জিন্দাল গ্রুপ ভরতের পড়াশোনায় সাহায্য করতে এগিয়ে আসে। তার পরেই টাকার চিন্তা ছেড়ে মন দিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন ভরত। ফলও পান। আইআইটি ধানবাদ থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন ৯৮ শতাংশ নম্বর এবং একটি সোনার পদক নিয়ে।
তবে ভরতের এই সাফল্যের পেছনে ইসরোর হাতও রয়েছে। পাশ করার আগেই, সপ্তম সেমেস্টারে পড়ার সময়ে ভরতকে চিনে নিয়েছিল ইসরো। বাছাই করে তাঁকে সুযোগ দিয়েছিল সাম্প্রতিক চন্দ্রযান মিশনে। আর এরপরের ইতিহাস নিজেই সৃষ্টি করে নিয়েছে ভরত। তাঁর পরিশ্রম গোটা বিশ্বের কাছে দেশকে পৌঁছে দিয়েছে নতুন স্থানে।