দিল্লি, ২৪ আগস্ট – চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মনুষ্য উপনিবেশ গড়ে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণেই চন্দ্রযান-৩ -এর সঠিক অবতরণ স্থান হিসেবে বেঁচে নেওয়া হয়েছে দক্ষিণ মেরুকে। এ কথা জানিয়েছেন ইসরোর প্রধান এস সোমানাথ। মহাকাশ গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে মনুষ্য উপনিবেশ তৈরির সম্ভাবনা উজ্জ্বল। বুধবার চন্দ্রযান- ৩- -এর অভিযান সফল হওয়ার পর বৃহস্পতিবার এই আসার কথা শোনান ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার প্রধান।
বুধবার সন্ধ্যায় ইসরোর চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটি স্পর্শ করেছে। ভারতীয় সময় হিসেবে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে চাঁদের মাটিতে সচল হয়েছে ‘প্রজ্ঞান’। ইসরোর প্রধান এস সোমানাথ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সাক্ষাৎকারে সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, কেন চন্দ্রযান-৩ চাঁদে অবতরণের জন্য তার দক্ষিণ মেরুকেই বেছে নিয়েছে। ইসরো প্রধান বলেন, ‘আমরা দক্ষিণ মেরুর কাছাকাছি গিয়েছি যা প্রায় ৭০ ডিগ্রি। সূর্যের আলোয় কম আলোকিত হওয়ায় চাঁদের দক্ষিণ মেরুর একটি সুবিধেও রয়েছে। চাঁদের পাথরের মধ্যে লোহা, ম্যাগনেশিয়াম, সিলিকন, অ্যালুমিনিয়াম, টাইটেনিয়ামের মতো খনিজ রয়েছে কি না, তার সন্ধানও করবে প্রজ্ঞান।’ বিজ্ঞানীদের ধারণা, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে তেজস্ক্রিয় মৌলের বড়সড় ভান্ডার রয়েছে। সে আকর্ষণেই আমেরিকা, রাশিয়া, চিন বার বার অভিযান চালানোর চেষ্টা করেছে চন্দ্রপৃষ্ঠের দক্ষিণ ভাগে। আমেরিকার ‘অ্যাপোলো’ মিশনেরও লক্ষ্য ছিল তেজস্ক্রিয় মৌল। ইসরো প্রধান বলেন, যে সমস্ত বিজ্ঞানী চাঁদ নিয়ে কাজ করছেন , তাঁরা চাঁদের দক্ষিণ মেরুর প্রতি আগ্রহ দেখান কারণ শেষ পর্যন্ত মানুষ চাঁদে যেতে চায় এবং সেখানে উপনিবেশ তৈরী করতে চায়। মানুষ ভ্রমণ করতে চায়। তাই সবথেকে সেরা যে জায়গাটির আমরা সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছিলাম তা চাঁদের দক্ষিণ মেরুতেই হওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে।’
চাঁদে আগামী দিনে মানুষের বাসযোগ্য উপনিবেশ গড়ে তোলার জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। সৌরজগতের অন্য গ্রহ যেমন মঙ্গল, শুক্র, বৃহস্পতিতে পৌঁছনোরও চেষ্টা চলছে দীর্ঘ দিন ধরেই। বিজ্ঞানীদের দীর্ঘদিনের লক্ষ্য চাঁদকে একটি বড় মহাকাশ স্টেশন হিসাবে ব্যবহার করে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাওয়া। তবে সমস্ত ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে যা যা তথ্যের প্রয়োজন, তা জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। চন্দ্রযান-৩ থেকে পাওয়া তথ্য সেই কাজে সাহায্য করতে পারে বলে আশাবাদী ইসরো প্রধান এস সোমনাথার।