পাটনা, ২১ আগস্ট– একদিকে, বিরোধী ২৬ দলের ইন্ডিয়া জোট, অন্যদিকে, শরিক ৩৮ দলকে নিয়ে এনডিএ। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে শাসক থেকে বিরোধী শিবির। দিল্লিতে ক্ষমতা বদলের লক্ষ্য নিয়ে কংগ্রেস, তৃণমূল, আপ, জেডিইউ, আরজেডি-সহ ২৬টি বিজেপি বিরোধী দল চব্বিশের রণকৌশল স্থির করতে একাধিক বৈঠক সেরেছে।
তবে ইন্ডিয়া জোট নিয়ে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরী যা বললেন তা কিন্তু জোটের পক্ষ্যে মোটেই ভালো নয়। ‘ইন্ডিয়া’ জোট নিয়েই মোটেই আশাবাদী নন সফল ভোট কৌশলী তথা একদা নীতীশ কুমারের ঘনিষ্ঠ প্রশান্ত কিশোর। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তাঁর মন্তব্য, ”বিরোধীরা এক হয়েছেন, এটা ভাল। তবে এভাবে একত্রিত হয়ে নির্বাচনে কোনও প্রভাব ফেলা যাবে না যদি না কোনও নির্দিষ্ট ইস্যুকে জনতার সামনে তুলে ধরতে পারে।”
প্রশান্ত কিশোরের এই রকম বক্তব্য যে প্রভাব ফেলার মতন কারণ ভারতের মতো এত বড় গণতান্ত্রিক দেশের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি নখদর্পণে তাঁর। আর সেই কারণেই তিনি ভোট কৌশলী হিসেবে এখনও পর্যন্ত সফল। বিহারে নীতীশ কুমারের দলের সরকার প্রতিষ্ঠা, দিল্লিতে আপ, বঙ্গে তৃণমূল সরকারের ক্ষমতা ধরে রাখার নেপথ্যে রয়েছে পিকে ‘স্যর’-এর নিখুঁত বৈজ্ঞানিক ছক। এর আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় সরকারকে ক্ষমতায় ধরে রাখতে দলের বেশ কয়েকটি কর্মসূচি ‘দিদিকে বলো’, ‘বাংলার গর্ব মমতা’র ব্যাপক সাফল্য কাজ করেছে। এসবের পিছনে ছিল তৎকালীন তৃণমূলের ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্ক এবং তাঁর টিমের কাজ। আর সেই পিকে স্যারের মুখে যদি ‘ইন্ডিয়া’ নিয়ে এই বাণী শোনা যায় তাহলে তা যে গুরুত্বের তা বলার অপেক্ষা রাখে না ।
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে রীতিমতো ব্যাখ্যা করে প্রশান্ত কিশোর শোনালেন, বিরোধী জোট আদৌ কতটা সফল হতে পারে এবং কীভাবে? তাঁর কথায়, ”শুধু বৈঠক, আলোচনা, নীতি নির্ধারণ করে চব্বিশের লড়াইয়ে নামলে ভুল হবে। কারণ, এভাবে কোনও নির্বাচন জেতা যায় না। নির্দিষ্ট ইস্যুতে তুলে জনতার কাছে যেতে হবে, সে বিষয়ে জনসচেতনতা, জনসমর্থন গড়ে তুলতে হবে। কর্মসূচি নিতে হবে। অনেকেই মনে করেন, ‘৭৭এ ইন্দিরা সরকারের পতন হয়েছিল বিরোধীরা একত্রিত হওয়ায়। না, ইন্দিরা সরকারের পতনের পিছনে এমার্জেন্সির খুব বড় ভূমিকা ছিল। যে কোনও রাজনৈতিক পালাবদলের নেপথ্যেই এমন কিছু কারণ থাকে। তার উপর ভিত্তি করেই লড়াই হয়।” নাহলে জোট গড়ে কোনও লাভ নেই বলেই মনে করেন প্রশান্ত কিশোর।