কলকাতা, ৫ অগাস্ট – সকাল ছটার পর শহরে ট্রাকের প্রবেশ নিষেধ। শুক্রবার ভোরে স্কুলে যাওয়ার পথে ট্রাকে পিষে মৃত্যু হয় এক শিশুর। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনার পর নড়েচড়ে বসল লালবাজার ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ দফতর। সকাল ৬টার পর কলকাতায় আর কোনও ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হবে না । শনিবার থেকেই এই নয়া বিধি লাগু করার নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। পাশাপাশি এখন থেকে কলকাতার সরকারি এবং বেসরকারি সমস্ত স্কুলের বাইরে যান নিয়ন্ত্রণ করবে পুলিশ। স্কুলগুলির সামনে এবং সংযোগকারী রাস্তা গুলিতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকবেন একজন ওসি কিংবা সম মর্যাদার পুলিশ আধিকারিক ।
দ্বিতীয় শ্রেণীর ছোট্ট সৌরনীল সরকার শুক্রবার সকালে বাবার হাত ধরেই রওনা হয়েছিল স্কুলের পথে। সকাল সোয়া ছ’টা নাগাদ বেপরোয়া লরি পিষে দিয়ে চলে যায় সৌরনীলকে। শনিবার সকাল থেকে বেহালার চৌরাস্তায় এবং সৌরনীলের স্কুলের রাস্তার প্রতিটি মোড়ে পুলিশের প্রহরা। রাস্তা পার হওয়ার জায়গাগুলিতে বসানো হয়েছে একাধিক ড্রপগেট। দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। অর্থাৎ, এখন থেকে আর রাস্তার যে কোন জায়গা দিয়ে রাস্তা পেরনো যাবে না। জেব্রা ক্রসিং ধরে যাতে পথচারীরা রাস্তা পারাপার করেন সেদিকেও নজরদারি রয়েছে পুলিশের।
শুক্রবারের দুর্ঘটনার পর শনিবার যথেষ্ট তৎপরতা দেখা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে। বাস বা অটোয় ওঠার জন্য চিহ্নিত করা নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়াচ্ছেন যাত্রীরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পথচারীদের রাস্তা পারাপার ও যান চলাচল ব্যবস্থার তদারকি করেন ডায়মন্ড হারবারের ওসি, ট্রাফিক অমলেন্দু চক্রবর্তী।
তবে এই পুলিশি ‘তৎপরতা’ নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান এলাকার মানুষ স্কুল পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। তাঁদের মতে, এই পুলিশি ব্যবস্থা আগে থাকলে এমন দুর্ঘটনা ঘটতো না। এভাবে রাস্তায় নেমে পুলিশকে যান নিয়ন্ত্রণ করতে কখনো দেখেন নি এলাকার মানুষ। তবে পুলিশের এই তৎপরতা কতদিন থাকবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে তাঁদের।
যদিও এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “ ট্রাফিক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে কোথায় কি ত্রুটি রয়েছে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”