রাঁচি, ৫ আগস্ট– প্রশ্ন ফাঁস রোধে কঠোর আইনে করল ঝাড়খন্ড সরকার। সম্প্রতি জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগের পরীক্ষার জেরেই এই আইন। জানা গিয়েছে, সেই পরীক্ষায় প্রশ্নের দর উঠেছিল ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা। পুলিশ প্রশ্ন ফাঁস চক্রের হদিশ পাওয়ার পর একেবারে শেষ মুহূর্তে ঝাড়খণ্ড স্টাফ সিলেকশন বোর্ডের ওই পদের পরীক্ষা বাতিল করতে হয় রাজ্য সরকারকে। সেই ঘটনার জেরে প্রশ্ন ফাঁস রোধে কঠোর আইন করল ঝাড়খণ্ড সরকার। আইনে প্রশ্ন ফাঁসকারী প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি, সরকারি কর্মচারীদের সর্বোচ্চ সাজা আজীবন কারাবাস এবং ১০ কোটি টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় পাশ হওয়া এই সংক্রান্ত বিলটি নিয়ে গোটা দেশেই সংশ্লিষ্টমহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে উত্তরাখণ্ড এবং গুজরাতের বিজেপি সরকারও প্রশ্ন ফাঁস আটকাতে আইন করেছে। কিন্তু ঝাড়খণ্ডের মতো কঠোর সাজার বিধান কোনও সরকারের আইনে নেই।
রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, প্রশ্ন ফাঁস ছাড়াও চাকরি প্রার্থী বাছাইয়ে যে কোনও ধরনের অনিয়মকেই একটি আইনের আওতায় আনা হয়েছে। অনেক সময়ই অভিযোগ ওঠে আদিবাসীদের ইচ্ছাকৃতভাবে বঞ্চনা করে সাধারণ ক্যাটিগরির প্রার্থীদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই অভিযোগেরও বিচার এই আইনেই হবে।
আইনে বলা হয়েছে, প্রশ্ন ফাঁস চক্রে ধৃত পরীক্ষার্থীদের অপরাধের পরিধি বিবেচনা করে আজীবন সরকারি চাকরির পরীক্ষায় বসা আটকে দেওয়া হতে পারে। এছাড়া, ন্যুনতম তিন বছর থেকে দশ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
অন্যদিকে, পরীক্ষা পরিচালনা, প্রেস ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ন্যুনতম জেল ১০ বছর এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। সর্বোচ্চ সাজা হবে যাবজ্জীবন জেল এবং ১০ কোটি টাকা জরিমানা।
গত মার্চে উত্তরাখণ্ড সরকার ও সাহায্যপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের পদগুলিতে চাকরির পরীক্ষার জন্য প্রতারণা বিরোধী আইন চালু করে। ওই রাজ্যের আইনে প্রশ্ন ফাঁস চক্রে যুক্ত পরীক্ষার্থীদের প্রথমবার অপরাধের জন্য তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ন্যূনতম পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়েছে। দ্বিতীয়বারের অপরাধের ক্ষেত্রে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার কথা বলা হয়েছে। তবে জরিমানার সর্বোচ্চ পরিমান এক কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
গুজরাত সরকারের আইনে তিন থেকে দশ বছর পর্যন্ত জেল এবং ১০ লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বিজেপি শাসিত এই দুই রাজ্যেও হালে সরকারি চাকরির প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা শেষ মুহূর্তে বাতিল করতে হয় প্রশ্ন ফাঁসের কারণে।
সরকারি সূত্রের খবর, এ বছর, রাজস্থান সরকারও এই ধরনের কঠোর আইন প্রণয়নের পথে এগচ্ছে। ওই রাজ্যেও প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় পরীক্ষা বাতিল করতে হয়েছে। তাতে আবার রাজস্থান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের এক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট। বিজেপির অভিযোগ, সেই কর্তা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের ঘনিষ্ঠ।