বাড়ি ফেরার মতো পরিস্থিতি এখনও আসেনি বলে জানিয়ে দিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে থাকা মেডিকেল টিমের চিকিৎসকরা। শনিবার বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁকে যে অ্যান্টিবায়োটিকের ডোজ দেওয়া হচ্ছে, তা পাঁচদিনের পরিবর্তে বাড়িয়ে সাতদিন করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসে মেডিকেল বোর্ড। বৈঠক শেষে চিকিৎসক সরোজ মন্ডল জানান , আপাতত শনিবার পর্যন্ত আইভি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হবে। বুধবার মেডিক্যাল বোর্ডের বৈঠকে হাজির ছিলেন সিপিএমের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক তথা রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র। বৈঠক শেষে বুদ্ধদেবের বেডের কাছে যান সূর্যকান্ত মিশ্র ও বিমান বসু। সেখানে সাত-আট মিনিট সময় কাটান তাঁরা ।
হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারে চিরকালই অনীহা প্রকাশ করে এসেছেন বুদ্ধদেব। গুরুতর অসুস্থ হলেও তিনি বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করাতে চান বরাবর। কিন্তু বাড়ি ফেরার মতো পরিস্থিতি এখনও আসেনি বলে জানিয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে থাকা মেডিকেল টিমের চিকিৎসকরা। বুধবার রক্ত দেওয়া হবে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বুদ্ধদেবের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ১০-এর কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেইজন্যই তাঁকে রক্ত দেওয়া হবে। প্রয়োজনে এক্স-রে করানো হতে পারে। মাঝেমাঝে দেওয়া হচ্ছে বাইপ্যাপ সাপোর্ট । তবে এখনও নিজে হাতে খাবার খেতে দেওয়া হচ্ছে না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে ।
শনিবার যে পরিস্থিতি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে, তার থেকে এখন অনেকটাই ভালো তাঁর শারীরিক অবস্থা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বুধবার সকালে তাঁর দীর্ঘদিনের সহকারী সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলেন, গল্পও করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। চোখে ভাল দেখতে না পাওয়ায় তাঁকে খবরের কাগজ পড়ে শোনানোর কথাও বলেন। জানা গেছে, এদিন আম খাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন তিনি। যেহেতু এখনও তাঁকে রাইলস টিউব দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে তাই এখন তাঁকে আম খেতে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা । কয়েকদিন পর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে আম দেওয়া হতে পারে।
এদিকে চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চললেও, আর হাসপাতালে থাকতে রাজি নন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধ। সূত্রের খবর, মঙ্গলবারই তিনি বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলেন, এদিনও চিকিৎসকদের কাছে তিনি জানতে চান যে, কবে নাগাদ তিনি বাড়িফিরতে পারবেন। বুদ্ধবাবুর দাবি, বাড়ি ফিরলেই তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তবে অনুমান, শনিবারের আগে ছাড়া পাবেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।