দিল্লি, ১ অগাস্ট – বিরোধী রাজনৈতিক জোট ‘ইন্ডিয়া’-র আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সংসদে অবশেষে আলোচনা হবে আগামী ৮ই অগাস্ট।
১০ অগস্ট জবাবি ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ৮ আগস্ট থেকে সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। দু’দিন ধরে আলোচনার পরে জবাব দেবে কেন্দ্র। প্রসঙ্গত, বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয় লোকসভায়। হিংসাদীর্ণ মণিপুর নিয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার পৌরোহিত্যে লোকসভা বিজনেস আডভাইসরি কমিটির এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি আদায় করতেই এই অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে বিরোধীরা। কারণ সংখ্যার নিরিখে মোদি সরকারকে অনাস্থা ভোটে বিপাকে ফেলা যে যাবে না তা ভালোভাবেই জানে বিরোধীরা। ইন্ডিয়া জোটের অন্তর্ভুক্ত বিরোধীদের সমর্থনে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ অনাস্থা প্রস্তাব আনেন। মণিপুর হিংসা নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করে বাদল অধিবেশনে সরব হন বিরোধীরা। গত ২৬ জুলাই লোকসভায় গৃহীত হয় এই অনাস্থা প্রস্তাব। তবে গৃহীত হওয়ার পরেও কেন অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হচ্ছে না, তা নিয়েও ক্ষুব্ধ বিরোধী সাংসদরা।
মঙ্গলবারই অধিবেশন চলাকালীন ফের উঠে আসে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার বিষয়টি। বিরোধী সাংসদরা দাবি করেন, মণিপুর ইস্যুতে আনা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে কবে আলোচনা হবে তার নির্দিষ্ট তারিখ জানাতে হবে স্পিকারকে। শেষ পর্যন্ত কমিটির বৈঠক থেকে ওয়াকআউট করেন বিরোধীরা। পরে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অনাস্থা প্রস্তাব আনতে বাধ্য করেছে কেন্দ্র।
অবশেষে এই প্রস্তাব আলোচনার তারিখ জানা যায়। লোকসভা সূত্রে খবর, আগামী ৮ ও ৯ তারিখ আলোচনা হবে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে। ১০ আগস্ট কেন্দ্রের জবাবি ভাষণে মুখ খুলবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রায় তিনমাস ধরে হিংসার আগুনে জ্বলছে মণিপুর। দীর্ঘ সময় কেটে গেলেও প্রধানমন্ত্রী এই নিয়ে কিছুই বলেননি। সংসদে দাঁড়িয়ে মণিপুর নিয়ে মুখ খুলতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে-সেই দাবিতে সুর চড়ান বিরোধীরা। তারপরেই পেশ হয় অনাস্থা প্রস্তাব। গত ৩ মে ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’-এর কর্মসূচি ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত হয় মণিপুরে। জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত কুকিদের সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। দু’সম্প্রদায়েরই বহু মহিলা নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ। রাজ্যে হিংসার মধ্যেই দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়ে যায় সমাজমাধ্যমে। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরেই দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। মণিপুরের ঘটনার নিন্দায় সরব হয় নানা মহল। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার ৭৮ দিন পর মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘‘এই ঘটনা যে কোনও সভ্য সমাজের লজ্জা।’’ এই নিয়ে বিজেপি বিরোধী জোট লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে। অনাস্থা এনে লোকসভা নির্বাচনের আগে মোদি সরকারকে চাপে রাখতে চাইছে বিরোধীরা, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।