মস্কোয় হামলা চালাতে এবার মশার আশ্রয়। ‘জেনেটিকালি মডিফাইড মশা’ – যার প্রস্তুতলারকে দেশ আমেরিকা। মশাদের জিনে তারতম্য ঘটানো হচ্ছে, এমনটাই দাবি ক্রেমলিনের। রুশ কর্মকর্তাদের মতে, মার্কিন বিজ্ঞানীরা প্রাণঘাতী এক ভাইরাস ঢুকিয়ে দিচ্ছেন মশাদের শরীরে। সেই মশা ছড়িয়ে দেওয়া হবে মস্কোয়। যার ফলে লক্ষ লক্ষ রুশ নাগরিক গুরুতর ভাইরাস-ঘটিত রোগের শিকার হতে পারেন। এই চাঞ্চল্যকর দাবি করেছেন, রুশ সাংসদ তথা নিরাপত্তা বিষয়ক সংসদীয় কমিটির প্রধান, ইরিনা ইয়ারোভায়া। তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, আমেরিকায় মশা নিয়ে এই গোপন গবেষণা চলছে। রাশিয়ার জন্য এটা একটা বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
ইরিনা ইয়ারোভায়ার আরও দাবি, , ইতিমধ্যেই এই ‘মশককুল বাহিনীর হামলা’-র মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে রাশিয়া। এক ভিডিও ফুটেজে তাঁকে বলতে শোনা যায় : “আমি শুধুমাত্র পেন্টাগনের একটি প্রকল্পের নাম করব, অ্যালাইড ইনসেক্টস। আমরা কীভাবে এই হুমকির মূল্যায়ন করব?পার্লামেন্ট জৈব সন্ত্রাসের হুমকির মোকাবিলায় একটি কমিশন গঠন করেছে। আমরা আমাদের দেশের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের অপেক্ষায় রয়েছি।” তাঁর দাবি, আমেরিকার বিজ্ঞানীরা মশার জিনগত বদল ঘটিয়ে এমন জেনেটিকালি মডিফায়েড মশা তৈরি করছে যা লক্ষ লক্ষ রুশ নাগরিকের প্রাণ কাড়তে পারে। ক্রেমলিনের দাবি, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে সেই মশাদের শরীরে ঢোকানো হচ্ছে মারণ জীবাণু, ওই মশা বাহিনীকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে এবং আমেরিকা নাকি ড্রোন থেকে মস্কোর উপর ওই মশা ফেলার তালে আছে!
জিনের তারতম্য ঘটানো মশা হামলার বিষয়ে প্রস্তুতি থাকলেও, আপাতত রাশিয়াকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলিং-এর। কারণ, রুশ সাংসদ এই দাবি করার পরই নেটিজেনরা রুশ প্রশাসনকে উপহাসের বিষয়বস্তু করে তুলেছে। ‘ইউক্রেনের লড়াকু মশারা ফিরে এসেছে’, ‘রাশিয়া একটি মিম বানানোর দেশ’ – এই রকম অজস্র মন্তব্য করা হয়েছে। কেউ কেউ আবার বলেছেন, ‘শুধুমাত্র রুশ জনগোষ্ঠীকে নিশানা করবে, এমন মশা তৈরি করা অসম্ভব। শুধুমাত্র একটি দেশের মানুষকে কামড়ানোর জন্য তাদের কেউ প্রশিক্ষণ দিতে পারে না। এই দাবি হাস্যকর।’ এদিকে , সম্প্রতি আমেরিকায় ম্যালেরিয়া ফিরে এসেছে। প্রায় ২০ বছর পর মার্কিন নাগরিকদের শরীরে পাওয়া গিয়েছে এই রোগের জীবাণু। তবে তার সঙ্গে এই রুশ দাবির কোনও যোগ আছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। ক্রেমলিনের শীর্ষ মহলের একাংশের বক্তব্য, আমেরিকার বিজ্ঞানীমহলের একাংশ ইঞ্জেকশন দিয়ে মশাকে মারণ জীবাণুর বাহকে পরিণত করার বিদ্যায় পারদর্শী। ফলে আগামীদিনে এই বিশেষ বাহিনী কতটা সক্রিয় হবে তা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ ক্রেমলিনের কপালে।