• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

কাকা শরদকে ৩৫এর শক্তি দেখালেন ভাইপো অজিত

মুম্বাই, ৫ জুলাই– কাকা-ভাইপো যুদ্ধে সরগরম মুম্বইয়ের রাজনীতি। বুধবার এনসিপি-র শক্তি পরীক্ষায় আপাতত জিত হল ভাইপো অজিত পাওয়ারের।  প্রবীণ শরদ পাওয়ার বর্তমানে একটু কোনঠাসা। তবে এই শক্তি পরীক্ষার আগে দুই আলাদা চিত্র অনেকটাই পরিষ্কার করে দিচ্ছে যে, মুম্বইয়ের ক্ষমতার রাস কার হাতে থাকতে পারে। এদিন দলীয় প্রধান শরদ পাওয়ারের বাড়িতে দলের অনেক বিধায়ক অনুপস্থিত। অন্যদিকে,

মুম্বাই, ৫ জুলাই– কাকা-ভাইপো যুদ্ধে সরগরম মুম্বইয়ের রাজনীতি। বুধবার এনসিপি-র শক্তি পরীক্ষায় আপাতত জিত হল ভাইপো অজিত পাওয়ারের।  প্রবীণ শরদ পাওয়ার বর্তমানে একটু কোনঠাসা। তবে এই শক্তি পরীক্ষার আগে দুই আলাদা চিত্র অনেকটাই পরিষ্কার করে দিচ্ছে যে, মুম্বইয়ের ক্ষমতার রাস কার হাতে থাকতে পারে। এদিন দলীয় প্রধান শরদ পাওয়ারের বাড়িতে দলের অনেক বিধায়ক অনুপস্থিত। অন্যদিকে, বান্দ্রায় বিদ্রোহী অজিত পাওয়ারের অফিসে বেলা ১’টার মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন ১৭জন বিধায়ক ।

জানা গেছে অজিত পাওয়ারের বাড়িতে আগেই শুরু হয়ে যায় মিটিং। সেই মিটিঙে প্রথমেই মাইক ধরে সন্ধির বার্তা দেন এনসিপি-র শুরুর দিকের নেতা ছগন ভুজবল। মঞ্চের পিছনে টাঙানো ফেস্টুনে শরদ পাওয়ারের বিশাল ছবিটি দেখিয়ে ভুজবল একটু আগে বলেন, দল ভাঙানো যদি আমাদের উদ্দেশ্য হত, তাহলে শরদজির ছবি এখানে রাখতাম না। তিনি বলেন, চলুন আমরা দলের স্বার্থে এক সঙ্গে কাজ করি।

বুধবার এনসিপি’তে শক্তি পরীক্ষায় বিধায়ক সংখ্যায় শরদ পাওয়ারকে ভাইপো অজিত দেখিয়ে দিয়েছেন তিনিও পারেন। সদ্য মহারাষ্ট্রের উপ মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসা অজিতের বৈঠকে বুধবার হাজির ছিলেন এনসিপি-র ৫৩ বিধায়কের ৩৫ জন। অন্যদিকে, শরদ পাওয়ারের ডাকা বৈঠকে হাজির হন ১৪ বিধায়ক। অর্থাৎ ১০জন বিধায়ক কোনও শিবিরের বৈঠকেই যোগ দেননি বুধবার।

দুই শিবিরই দাবি করেছিল, ওই দশ বিধায়ক পথে যানজটে আটকে পড়েছেন। কিন্তু বৈঠক শুরুর তিন ঘণ্টা পরও তাঁরা অনুপস্থিত থাকায় ধরে নেওয়া হচ্ছে আপাতত তাঁরা কোনও শিবিরেই নেই। অর্থাৎ তাঁরা জল মাপছেন। অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেবেন।

তবে অজিতের এই জিতে খুশি হওয়ার কারণ দেখছে না বিজিপি। বলতে গেলে এনসিপির শক্তি পরীক্ষার ফলে হতাশ বিজেপি। কারণ, অজিত দাবি করেছিলেন তাঁর সঙ্গে ৪০ বিধায়কের সমর্থন আছে। সংখ্যাটা বেড়ে ৪৫ হতে পারে, কিন্তু ৩৫ হবে না কোনওভাবেই।

তবে যে ১৪ বিধায়ক গরহাজির ছিলেন তাদের নিয়েই এখন ধন্দে কাকা-ভাইপো দু’জনই। কারণ সেই বিধায়কদের কয়েক জনের তরফে পরিবার, অনুগামীরা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তাঁরা মুম্বইয়ে নেই। কেউ জানিয়েছেন, অসুস্থ। কিন্তু সুস্থ থাকলে কোন শিবিরের বৈঠকে যেতেন তা স্পষ্ট করেননি। তাই বলা মুশকিল তারা কোনদিকে।

বুধবারের শক্তি পরীক্ষায় কাকা ৮৩ বছর বয়সি শরদ পাওয়ার বছর তেষট্টির ভাইপো অজিতের কাছে গেরে গেলেও রাজনৈতিক মহল মনে করছে এনসিপি-র রাশ এখনও দলীয় সুপ্রিমোর হাতে। দু-পক্ষই বুধবারের জন্য হুইপ জারি করলেও তার কোনও আইনি বৈধতা নেই বলে ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত। সেই কারণে, বুধবারই স্পিকারের কাছে অজিত শিবিরের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানানো শরদের পক্ষে সহজ হবে না বলে অনেকেই মনে করছেন। দলত্যাগ বিরোধী আইনের সাজা এড়াতে হলে অজিতের সঙ্গে অন্তত ৩৬ বিধায়কের সমর্থন থাকা দরকার। কিন্তু ২৯-এ থেমে গিয়েছে তাঁর প্রথম দফার লড়াই।

বাস্তবে দেখা গেল এনসিপি-কে ভাঙাতে প্রয়োজনীয় দুই তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৩৬ বিধায়কের সমর্থনও আদায় করতে পারেননি অজিত। ফলে এনসিপি-র বিরোধ আদালত ও নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত গড়াবে। ততদিনে শরদ পাওয়ার ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারেন, আশঙ্কা পদ্ম শিবিরের। অতীতে একাধিক ঘটনায় শেষ মুহূর্তে বাজিমাৎ করেছেন মারাঠা স্ট্রংম্যান শরদ।

অন্যদিকে, পাওয়ারের বাড়ির বৈঠক এখনও শুরু হয়নি। সভাকক্ষে এখনও হাজির হননি প্রবীণ নেতা। তিনি মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে এবং আরও কয়েকজন প্রথমসারির নেতার সঙ্গে একান্তে বৈঠক করছেন।

কিন্তু এরই মধ্যে টিভির পর্দায় ব্রেকিং নিউজে রাজনীতি নিয়ে চর্চা নতুন দিকে মোড় নিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের খবর, অজিত পাওয়ারকে মন্ত্রিসভায় নেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের শিবিরে আড়াআড়ি বিভাজন তৈরি হয়েছে। একাধিক মন্ত্রী ও বিধায়ক বিদ্রোহের সুরে শিন্ডের অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, দলকে অন্ধকারে রেখে শিন্ডে বিজেপির চাপের কাছে নতিস্বীকার করে অজিত পাওয়ারকে মেনে নিয়েছেন। শুধু তাই নয়, একাধিক মন্ত্রী পদ অজিতের শিবিরকে দেওয়া হচ্ছে।

বিদ্রোহীদের মধ্যে সবচেয়ে সরব শিন্ডের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শম্ভুজরাজে দেশাই। তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা কয়েকজন মন্ত্রী ও বিধায়ক তৈরি হয়ে আছি। উদ্ধব ঠাকরে ভাল কোনও প্রস্তাব দিলে আমরা তাঁর ডাকে সাড়া দেব।’ তাঁর বক্তব্য, ‘মন্ত্রিসভায় নতুন শরিক যোগ দেওয়ার খবরও জানতে পারছি টিভির খবর থেকে। এরচেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কী আছে।’ শোনা যাচ্ছে শম্ভুজরাজের সঙ্গে জনা দশ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে।