বেঙ্গালুরু, ৩ জুলাই– ৮ জন বিধায়ককে নিয়ে দল ছেড়ে বেরিয়ে এনডিএ’র সঙ্গে হাত মেলানো অজিত পওয়ার সমস্ত এলোমেলো করে দিয়েছেন। বিরোধী সমীকরণ পাল্টে তিনি এখন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী। আর এতেই বেঙ্গালুরুর বৈঠক পিছিয়ে যাওয়ার কথা কিন্তু তা না করে তড়িঘড়ি বৈঠকের দিন ঘোষণা করে দিলেন কেসি ভেনুগোপাল। সোমবার কংগ্রেসের তরফে ভেনুগোপাল বলে দেন, বেঙ্গালুরুতে বিরোধী জোটের বৈঠক হবে ১৭ ও ১৮ জুলাই। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পাটনার বৈঠকে হাজির সমস্ত রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
আগে ঠিক ছিল, ১৪ জুলাই বেঙ্গালুরুতে বিজেপি বিরোধী দলগুলির দ্বিতীয় বৈঠক হবে। স্বয়ং শরদ পওয়ার সেই দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু রবিবার তাঁর শিবিরই বড়সড় ধাক্কা খায়।
রবিবার মহারাষ্ট্রে এনসিপিতে ভাঙনের পর অনেকেই বলতে শুরু করেছিলেন যে লোকসভা ভোটের আগে মোদি বিরোধী জোট ধাক্কা খেল। অর্থাৎ লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস, তৃণমূল, জেডিইউ সহ প্রায় ১৭ টি দল মিলে যে জোটের প্রস্তুতি শুরু করেছেন তার শেষের শুরু হয়ে গেল! এরই মধ্যে সংযুক্ত জনতা দল নেতা কেসি ত্যাগী আবার জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিরোধী জোটের বৈঠক পিছিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু শেষমেশ বিরোধী জোট যে ভাঙেনি তা বোঝাতে জুলাইয়েই মিটিংয়ের সিদ্ধান্তে দাঁড়িয়ে থাকে চাইল কংগ্রেস। সোমবার দুপুরে ট্যুইট করে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, “গতকাল মহারাষ্ট্রে বিজেপি ওয়াশিং মেশিন চালু হয়েছে। তার ডিটারজেন্টের নাম আইস (ইনকাম ট্যাক্স, ইডি, সিবিআই)।
এর পরই বিজেপির থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকে বলতে শুরু করেছিলেন যে বিরোধী ঐক্য ধাক্কা খেল। কিন্তু তাঁরা জেনে হতাশ হবেন, পাটনা পরবর্তী বৈঠক বেঙ্গালুরুতে। জুলাইয়ের ১৭ ও ১৮ তারিখ, এই দু’দিন ধরে হবে বৈঠক।”
জয়রামের কথায়, মুম্বই অপারেশনের পর সত্যিই যদি কিছু হয়ে থাকে, তা হল বিরোধীদের জেদ বেড়ে গিয়েছে।
রবিবার মহারাষ্ট্রে বিরোধী জোটে বড় ধাক্কা লেগেছে। লোকসভা ভোটের আগে মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস, উদ্ধব ঠাকরে এবং এনসিপি মিলে বিজেপিকে ধাক্কা দিতে পারে বলে অনেকে মনে করছিলেন। এরই মধ্যে এনসিপি নেতা তথা শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিণ্ডে সরকারে সামিল হয়েছেন। রাতারাতি উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছেন অজিত। রবিবার মহারাষ্ট্রে ওই মহানাটকীয় ঘটনার পর সোমবার সকালে নীতীশের সংযুক্ত জনতা দলের মুখপাত্র ও নেতা কেসি ত্যাগী জানিয়েছিলেন, সংসদের অধিবেশন শুরু হবে ২০ জুলাই থেকে। তা ছাড়া কর্নাটক ও বিহারে বিধানসভার বাদল অধিবেশনও ওই সময়ে চলবে। তাই বিরোধী জোটের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হলে জোটের বৈঠক হবে।
কিন্তু পরে বিরোধী দলের নেতারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দেখেন, বৈঠক পিছিয়ে দিলে ভুল বার্তা যাবে। বিজেপি সেটা নিয়ে নেতিবাচক প্রচার করবে। তাই বৈঠক জুলাইতেই হোক। এ ব্যাপারে সবার সঙ্গে কথা বলেন কংগ্রেসের নেতারা। তার পর জুলাই ডেটলাইনেই অনড় থাকেন।