• facebook
  • twitter
Monday, 25 November, 2024

মোদি সরকারের রেড সিগনালে কংগ্রেসের চাল প্রকল্প

বেঙ্গালুরু, ২৯ জুন– কর্নাটকে সদ্য ক্ষমতায় আসা কংগ্রেস সরকার তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে গিয়ে গোড়াতেই নরেন্দ্র মোদি সরকারের রেড সিগনালের মুখে পড়েছে । সেই সিগনালের কারণে সেখানে থেমে গিয়েছে কংগ্রেসের ‘অন্নভোগ’ প্রকল্প।  অথচ সরকারের নয় বছরের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির সময়ে ভারত খাদ্যে এতটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ যে পুরো ইউরোপ

বেঙ্গালুরু, ২৯ জুন– কর্নাটকে সদ্য ক্ষমতায় আসা কংগ্রেস সরকার তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে গিয়ে গোড়াতেই নরেন্দ্র মোদি সরকারের রেড সিগনালের মুখে পড়েছে । সেই সিগনালের কারণে সেখানে থেমে গিয়েছে কংগ্রেসের ‘অন্নভোগ’ প্রকল্প। 

অথচ সরকারের নয় বছরের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরতে গিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, নরেন্দ্র মোদির সময়ে ভারত খাদ্যে এতটাই স্বয়ংসম্পূর্ণ যে পুরো ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার মানুষকে সারা বছর খাওয়াতে সক্ষম। সেই কেন্দ্রীয় সরকারই কিনা কংগ্রেসকে বাড়তি চাল দিতে অস্বীকার করেছে। 

দু’মাস আগের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস যে সব জনপ্রিয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারমধ্যে প্রধান পাঁচটি ইতিমধ্যেই কার্যকর করা শুরু করেছে রাজ্য সরকার। পাঁচ প্রকল্পের একটি হল রেশনে গরিব পরিবারকে প্রতি মাসে ১০ কেজি করে বাড়তি চাল দেওয়া হবে। ‘অন্নভোগ’ নামে ওই প্রকল্প ইতিমধ্যে চালু করেছে সরকার। প্রথম মাসের চাল দেওয়া হয়েছে।

ভোট বিশ্লেষকদের অনেকের মতে, কর্নাটকে কংগ্রেসের বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় ফেরার পিছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল পাঁচ প্রতিশ্রুতির। দেখা গিয়েছে, গরিব মানুষের সিংহভাগের সমর্থন পেয়েছে কংগ্রেস। তাতে রেশনে বাড়তি দশ কেজি চালের প্রতিশ্রুতি মন্ত্রের মতো কাজ করেছে, কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তের জেরে যা গোড়াতেই রেড সিগনালের মুখে পড়স।

কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক পাশ কাটাতে এটা মোদি সরকারের পরিকল্পনা করেই এটা করছে। বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি যাতে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন করতে না পারে সে জন্যই উদ্বৃত্ত থাকা সত্ত্বেও রাজ্যকে বাড়তি চাল দেওয়া হচ্ছে না। আর সেই কারণেই দ্বিতীয় কিস্তির চালের সংস্থান করা যায়নি বলে অভিযোগ কংগ্রেস সরকারের।

এই প্রকল্পের জন্য ২.২৮ লাখ টন চাল বাজার থেকে কিনতে গিয়ে কেন্দ্রের বাধার মুখে পড়েছে কর্নাটক সরকার। কেন্দ্রের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রক এক নির্দেশ জারি করে বলেছে, খোলা বাজার থেকে এই বিপুল পরিমাণ চাল রাজ্য সরকার কিনতে পারবে না। কারণ, তাতে বাজারে চালের সংকট দেখা দিতে পারে। তাছাড়া, বিক্রেতারা চাল আরও বেশি দামে বিক্রির সুযোগ হারাবেন সরকার কিনে নিলে।

অন্নভোগ প্রকল্পের ১০ কেজি চালের পাঁচ কেজি রাজ্য সরকার নিজের ভাণ্ডার থেকে দেবে। বাকি পাঁচ কেজির ৩৪ টাকা কিলো দরে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে কিনতে চেয়ে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। দিল্লির খাদ্যমন্ত্রক জানিয়ে দেয়, রাজ্যের কোটার বাইরে অতিরিক্ত চাল দেওয়া সম্ভব নয়।

গত সপ্তাহে সিদ্দারামাইয়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে গোটা বিষয়টি জানান। তারপরও দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার পাঁচ কেজি চালের পরিবর্তে ৩৪ টাকা কেজি হিসাবে নগদ অর্থ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জুন মাস থেকেই টাকা ব্যাঙ্কে জমা করা হবে। চালের দাম নগদ টাকায় মেটাতে কর্নাটক সরকারকে প্রতি মাসে ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে। পাশাপাশি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নিয়ে চরমে উঠেছে বিজেপি-কংগ্রেস বিরোধ। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া, উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমারের বক্তব্য, রাজ্য সরকারকে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে বাধা দিচ্ছে কেন্দ্র। রাজ্যের মানুষকে ভাতে মারার চেষ্টা হচ্ছে।

অন্যদিকে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি নলিন কুমার কাতিলের পাল্টা বক্তব্য, বাড়তি চাল কীভাবে মিলবে সেই বিষয়টি বিবেচনায় না রেখেই কংগ্রেস প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাছাড়া আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম, মানুষকে নগদ টাকা দেওয়া হোক। যাতে প্রয়োজনে কেউ চালের পরিবর্তে আটা কিনে নিতে পারে।