ইম্ফল, ২৯ জুন– প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধি দু’দিনের সফরে গিয়েছেন মনিপুরে। সেখানে চলতে থাকা অশান্তি রোখাই তাঁর উদ্যেশ্য বলে জানিয়েছেন তিনি। সেইমত বৃহস্পতিবার মনিপুরে পৌঁছলেই রাহুলের কনভয় আটকে দিল মণিপুর পুলিশ। এদিন রাহুল ইম্ফল থেকে জাতি দাঙ্গায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ চূড়াইচাঁদপুরে যাচ্ছিলেন। ইম্ফল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের ওই জেলা সদর শহরে ঢোকার কিছু আগেই মনিপুর পুলিশ রাহুলের কনভয় থামায়। প্রাথমিকভাবে পুলিশের তরফে জানান হয়েছে, নিরাপত্তার কথা বলে রাহুলের গাড়ি আটকে দিয়েছে। বলা হয়েছে, সামনের রাস্তা নিরাপদ নয়।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি মেনে রাহুল গান্ধি বৃহস্পতিবার সকালে মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে পৌঁছান। আগামীকাল শুক্রবারও ওই অশান্ত পাহাড়ি রাজ্যে থাকার কথা তাঁর। গত ৩ মে মণিপুরে জাতিদাঙ্গা শুরুর পর এই প্রথম কোনও রাজনৈতিক নেতা মণিপুরের দাঙ্গা পীড়িতদের মুখোমুখি হতে গিয়েছেন।
রাহুল ইম্ফলে পৌঁছে সবচেয়ে অশান্ত এলাকা চূড়াইচাঁদপুরে যাচ্ছিলেন। সেখানে দু’টি ত্রাণ শিবির পরিদর্শনের পর স্থানীয় কলেজ ময়দান ও কমিউনিটি হলে দুটি জনসভা করার কথা। আগামীকালও তাঁর দুটি ত্রাণ শিবিরে যাওয়ার কথা। সেই সঙ্গে জনসভাও করবেন।
রাহুলকে আটকানো নিয়ে কংগ্রেস নেতারা স্থানীয় প্রশাসন এবং সেনা অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছেন। কংগ্রেসের বক্তব্য, রাহুলের সফরের জন্য উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।
যদিও কংগ্রেস তরফে প্রশ্ন তোলা হয় এখন রাহুলের নিরাপত্তার অজুহাতে মনিপুরে আটকে দেওয়া হয়েছে। তাহলে রাহুল দিল্লি থেকে রওনা হওয়ার আগে কেন নিরাপত্তার বিষয়টি জানানো হল না। কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতারা বলেছেন অশান্ত মণিপুরে যাওয়ার আগে রাহুলের উচিৎ ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জানানো। সরকারিভাবে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের কাছে কংগ্রেস নেতার সফরের কোনও খবর ছিল না।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে জানানোর প্রশ্ন ওঠে না কারণ, মণিপুর সফরে কোনও নিষেধাজ্ঞা নেই। তাছাড়া রাহুল গান্ধি পর্যটক নন। মণিপুরের রাজ্য প্রশাসন সব জানত। সেই মতো ইম্ফল বিমানবন্দর থেকে রাজ্য পুলিশের পাইলট কার ছিল কংগ্রেস নেতার কনভয়ে।
জানিয়ে রাখি, মনিপুরে অশান্তি শুরুর ২৬ দিনের মাথায় কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চারদিনের সফরে মণিপুরে গেলেও তিনি মূলত ইম্ফলে প্রশাসনিক বৈঠক নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘটনার ৫৫ দিন পরও মণিপুর নিয়ে মুখ খোলেননি।
গত শনিবার অমিত শাহের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে একাধিক দল মণিপুরে সব দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে শান্তি কমিটি পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ জানিয়ে দেন, এখনও পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। এরপরই কংগ্রেস রাহুল গান্ধীর সফর ঘোষণা করে। পাটনার বিরোধী বৈঠকে যোগ দেওয়া একাধিক দল রাহুলের সফরকে স্বাগত জানিয়েছে।