অসম, ২৫ জুন – অসমে ভয়াবহ বন্যার জেরে ৯ টি জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত চার লক্ষ মানুষ। চলতি বছরে অসমে এখনও পর্যন্ত ৩ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে অসম রাজ্য় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বন্যা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে ফোন করে খোঁজখবর নেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পরিস্থিতি সামাল দিতে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও প্রস্তুত বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যদিও জলের স্তর নামতে শুরু করেছে । তবে বহু গ্রাম এখনও জলের তলায় ।
বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত অসমের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বক্সা, বারপেটা, ডারাং, ধুবড়ি, গোয়ালপাড়া, কামরূপ, লখিমপুর, নলবাড়ি এবং উড়ালগুড়ি জেলা। এই জেলাগুলিতে ৪ লক্ষ ৭ হাজার ৭০০ মানুষ বন্যা কবলিত। রবিবার কিছু কিছু এলাকায় জলের স্তর নামতে শুরু করেছে। প্রশাসনের তরফে ১০১টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্তত ৮১ হাজার ৩৫২ জনকে। ৫টি জেলায় খোলা হয়েছে ১১৯টি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র .
পরিসংখ্যান বলছে, অসমের মোট ১ হাজার ১১৮টি গ্রাম বানভাসি। এই মুহূর্তে গ্রামগুলি এখন জলের নীচে। ৮ হাজার ৪৬৯ হেক্টর চাষের জমি বন্যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নষ্ট হয়েছে মাইলের পর মাইল ফসল।
বন্যার কারণে সোনিতপুর, কোকরাঝাড়, দক্ষিণ সালমারা সহ বেশ কয়েকটি জেলায় ক্ষয় হয়েছে। করিমগঞ্জের কিছু অংশে ভারী বর্ষণে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। দারাং জেলার শহুরে এলাকায় উল্লেখযোগ্যভাবে প্লাবিত হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদ তেজপুর ও নেয়ামতিঘাটে বিপদ চিহ্নের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আরও ঝুঁকি তৈরি করছে।
অবিশ্রান্ত বৃষ্টির জেরে ফুঁসে উঠেছিল অসমের ব্রহ্মপুত্র নদ। তাঁর একাধিক শাখানদীর জল বয়েছে দুকূল ছাপিয়ে। বিঘার পর বিঘা জমির ফসল, বসতবাড়ি সেই জলে ভেসে গিয়েছে। প্রতি বছরই অসমে বর্ষাকালে এমন বন্যা হয়ে থাকে। গত বছর বন্যার কারণে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে।
রবিবার সকালেই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানান, “আজকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ফোন করে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, এই সময়ে কেন্দ্র সরকার অসমের পাশে রয়েছে। প্রস্তুত আছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। প্রয়োজন পড়লেই অসমে কাজ শুরু করতে পারে তারা।” যদিও হিমন্তের মতে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।