রেলের নিখোঁজ ওই জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের নাম আমির খান। তিনি সোরো সেকশনে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানা যায় । সোমবার তাঁর বাড়িতে তাঁকে খুঁজতে যান সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। কিন্তু তখন বাড়িটি তালাবন্ধ ছিল। ফলে বাড়িটি সিল করে দিয়ে আসে সিবিআই। সূত্রের খবর, ওই বাড়ির উপর তারা আলাদা করে নজর রাখতে শুরু করেছে। করমণ্ডল দুর্ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে রেলের বহু কর্মীকেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। সেই সময় এই জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারকেও এক বার ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তবে তাঁকে কোথায় ডাকা হয়েছিল, তা জানানো হয়নি। গত ১৬ জুন সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল বালেশ্বর ছেড়ে চলে যায়। এরপর ফের সোমবার বালেশ্বরে আসেন সিবিআই গোয়েন্দারা। জুনিয়র ইঞ্জিনিয়রের বাড়িটি তখনই সিল করে দেওয়া হয়। এই যুবকের খোঁজেই সিবিআই ফিরে এসেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁকে না পেয়ে বাড়ি সিল করা হয়েছে। সিবিআই এরপর বাহানগা বাজারের স্টেশন মাস্টারের বাড়িতে যায়। তাঁকেও দুর্ঘটনা সংক্রান্ত খবরাখবর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
গত ২ জুন ওড়িশার বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেস, ডাউন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ি। তীব্র গতিতে ছোটার সময় হঠাৎই লুপ লাইনে ঢুকে গিয়ে মালগাড়িকে ধাক্কা মেরে উল্টে যায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস। করমণ্ডলের ইঞ্জিনটি উঠে যায় মালগাড়ির একটি কামরার উপরে। এই ঘটনায় ২৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা হাজারের বেশি।
প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, সিগন্যালের ত্রুটিতেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু পরে রেলের তরফেও জানানো হয়, অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। রেলমন্ত্রী নিজেও সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেন। কোনও ব্যক্তির হস্তক্ষেপ ছাড়া শুধু প্রযুক্তিগত ত্রুটিতে এত বড় দুর্ঘটনা সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরাও ।
সিবিআই তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। প্রাক্তন রেলমন্ত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, এখানে সিবিআই কী করবে? এখানে কি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে ? তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ঘটনার দু’দিন পর থেকেই বিজেপ শিবিরের লোকজন অন্তর্ঘাতের সম্ভাবনার কথা বলতে শুরু করেছিলেন। অনেকের মতে, পরিকাঠামো, যাত্রীনিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যর্থতা ঢাকতেই এসব কথা রটানো হচ্ছে। এদিনের ‘জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার নিখোঁজ’-এর গুজবও সেই অভিপ্রায় থেকে হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই । তবে রেলের তরফ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে , এটি গুজব , কোন রেলকর্মী নিখোঁজ নন। প্রত্যেকেই তদন্তে সহযোগিতা করছেন।