দিল্লি, ১৩ জুন– শিক্ষা থেকে চাকরি যেদিকেই দৃষ্টি যায় শুধু দুর্নীতি। নেতা-মন্ত্রীদের নানান দুর্নীতি নিয়ে জরাগ্রস্ত বাংলার তৃণমূল সরকার। সেই দুর্নীতির গুঞ্জন এবারে দিল্লিতেও। কয়েকদিন আগেও বাংলাকে প্রাপ্য না দেওয়া নিয়ে নিয়ে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন মমতা-অভিষেক। এবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে তোপ দেগে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী মোদি।
মঙ্গলবার দেশের ৭৭ হাজার কর্মপ্রার্থীর হাতে ভার্চুয়াল মাধ্যমে নিয়োগ পত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দফতরের চাকরির পরীক্ষায় নির্বাচিত হয়েছেন এই ৭৭ হাজার কর্মপ্রার্থী।সেই অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার নিয়ে সরব হন প্রধানমন্ত্রী। বা বলা ভালো মোদির নিশানায় আসলে ছিল বাংলাই। সঙ্গে নাম নেওয়া হয় বিহারের। বাংলার দুর্নীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সংবাদ মাধ্যম থেকে জেনেছি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরের তদন্তে নেমে জেনেছে বাংলায় পদ অনুযায়ী টাকার অঙ্ক স্থির করা আছে।’ এখানেই থেমে না থেকে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষক এবং পুরসভার কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির কথা আলাদা করে উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যদি ঝাড়ুদারের পদে চাকরি পেতে চান তারজন্য একটা রেট আছে। ওই টাকা দিলে তবে চাকরি মিলবে। এই ভাবেই গাড়ির চালক, নার্স, ক্লার্ক, শিক্ষক, এমন কোনও পদ নেই যে টাকা ছাড়া কাজ হয়।’
বাংলা ও বিহারের দৃষ্টান্ত টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাকরির বিনিময়ে টাকা নিয়ে হাজার হাজার ছেলেমেয়ের ভবিষৎ অনিশ্চিত করে তোলা হয়েছে।বিজেপির শাসনে এই অনাচার নেই। আমরা বেকারদের জীবন সুরক্ষার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
বাংলায় চাকরি দুর্নীতির পর সম্প্রতি পুরসভায় কর্মী নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ নিয়েও তদন্ত শুরু করেছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বছর গড়িয়েছে ইডি, সিবিআইয়ের তদন্ত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এই প্রথম নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এর চড়া সুরে সরব হলেন।
এজন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়োগ মেলার অনুষ্ঠানকে বেছে নেন প্রধানমন্ত্রী। বিগত কয়েক বছর যাবৎ কেন্দ্রীয় সরকারের যাবতীয় পদে নিয়োগপত্র কেন্দ্রীয়ভাবে প্রধানমন্ত্রী বিলি করছেন ভার্চুলাল মাধ্যমে। এটাকেই মোদি সরকার চাকরি মেলা বলছে।
যদিও বিরোধীদের বক্তব্য, বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ হল চাকরি দুর্নীতির স্বর্গ রাজ্য। সেখানে চাকরি দুর্নীতির জেরে বহু কর্মপ্রার্থী আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন।
নাম না করে মঙ্গলবারের ওই অনুষ্ঠান থেকে মোদি বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদকেও নিশানা করেন। আরজেডি সুপ্রিমো রেলমন্ত্রী থাকাকালে রেলে জমির বিনিময়ে চাকরি দিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এ নিয়ে ইডি ও সিবিআই তদন্ত চালাচ্ছে। অভিযোগ চাকরি প্রাপকদের কাছ থেকে বহু মুল্যের জমি লিখিয়ে নিয়েছেন লালুপ্রসাদের পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠজনেরা।
প্রধানমন্ত্রী লালুপ্রসাদের নাম না করে বলেন, একজন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী রেলের চাকরি বিক্রি করেছেন। সিবিআই এই অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে।