নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অয়নের স্ত্রী কাকলি এবং পুত্রকে এর আগেও তলব করেছিল ইডি। এপ্রিলের সেই জেরার পর ইডি দফতর থেকে বেরোনোর পর সংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘আমাকে যে কোম্পানির ডিরেক্টর করা হয়েছে, তা আমি জানতাম না। ২০১৩ সালে যখন কোম্পানি তৈরি হয়, আমি তখন নাবালক।’’ ইডি দফতরে সে দিন প্যান কার্ড এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সমস্ত নথি জমা দিয়েছিলেন অয়ন-পুত্র অভিষেক শীল।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অয়নের বিরুদ্ধে ১০০ কোটির দুর্নীতির অভিযোগ করেছে ইডি। তদন্তে জানা গেছে, পরিবারের সদস্য, বন্ধু এবং কর্মচারীদের নথি ব্যবহার করে ৫০টির বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলেন অয়ন। টাকার হিসাব রাখতে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতেই রেখেছিলেন তিনি ।
ইডির দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে অপর ধৃত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরায় জানা যায়, ২০১২ এবং ২০১৪ সালের টেট-এ চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা তোলেন অয়ন। এর পর অয়ন কুন্তল ঘোষ এবং পার্থ-ঘনিষ্ঠ সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে টাকা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
ইডির তদন্তে উঠে এসেছে অয়ন-ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তীর নামও। ইডি আধিকারিকদের দাবি, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঝামেলা হওয়া বাড়ি ছেড়েছিলেন শ্বেতা। এর পর শ্বেতাকে তাঁর চুঁচুড়ার ফ্ল্যাটে থাকতে দেন অয়ন। ইডি চার্জশিটে দাবি করেছে, ওই ফ্ল্যাট শ্বেতাকে উপহার দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন অয়ন। যদিও ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে অভিষেক দাবি করেছিলেন শ্বেতাকে তিনি চেনেন না।
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে অয়নের বাড়ি এবং অফিসে টানা তল্লাশির পর তাঁকে গ্রেফতার করেছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে চাকরির পরীক্ষার একাধিক উত্তরপত্র ছাড়াও উদ্ধার করা হয় পুরসভায় নিয়োগ সংক্রান্ত পরীক্ষার বেশ কিছু অ্যাডমিট কার্ড এবং অন্যান্য নথি। ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি পাওয়া যায়।
এদিকে, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের জামাইকেও তলব করেছে ইডি। সোমবার জোকা ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে নিয়ে যাওয়া হয় ‘কালীঘাটের কাকু’কে। সেখানে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “বাড়ির লোককে ডাকছে। ওদের কিছু নেই। জামাইয়ের নামে কিছুই নেই।”