কলকাতা, ১১ জুন – ঠাকুরনগরে মতুয়াধামে গিয়েও মূল মন্দিরে প্রবেশ করতে পারলেন না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সকালে ঠাকুরমন্দিরে পুজো দিতে আসার কথা ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের । অভিষেকের কর্মসূচি পন্ড করতে সকাল থেকেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আসার খবর শুনে ময়দানে নেমে পড়েন স্থানীয় সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে বচসার মাঝে মূল মন্দিরে ঢুকে পড়েন শান্তনু। বন্ধ করে মন্দিরের দরজা। এই ঘটনার জেরে মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেননি অভিষেক। কিছু সময় অপেক্ষা করার পর পাশে অন্য একটি মন্দিরে পুজো দেন তিনি। এরপরেই শান্তনুকে লক্ষ্য করে অভিষেক হুঁশিয়ারি দেন , তিন মাস অন্তর ঠাকুরনগরে যাবেন তিনি।
রবিবার গাইঘাটা থেকে রওনা দিয়ে বিকেলের দিকে ঠাকুরনগর পৌঁছন অভিষেক। রবিবার উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হাবরায় জনসংযোগ কর্মসূচী ঘিরে রবিবার সকাল থেকেই বনগাঁর ঠাকুরনগরে সাজো সাজো রব পড়ে যায়। বিজেপি বিক্ষোভ শুরু করলে গোলমালের আশঙ্কায় মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, বিধানসভার মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ, দলের বিধায়ক তাপস রায় প্রমুখ । বিকেলে ৪টে নাগাদ ঠাকুরনগরে পৌঁছয় অভিষেকের কনভয়। তখন সেখানে অনুগামীদের নিয়ে হাজির ছিলেন শান্তনু। অভিষেক ঠাকুরবাড়িতে পৌঁছতেই শান্তনু মূল মন্দিরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন। এর ফলে হরিচাঁদ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত মন্দিরে প্রবেশ করতে পারেনন অভিষেক। সেই সময় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের পাশে ছিলেন প্রয়াত কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী তথা প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। মন্দিরে ঢুকতে না পেরে মমতাবালাকে পাশে নিয়েই উষ্মা প্রকাশ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ‘‘আমার ঠাকুরনগরে কোনও কর্মসূচি ছিল না, ছিল হাবরায়। কিন্তু আমি এখানে এসেছিলাম শুধু পুজো দিতে। কিন্তু দরজা বন্ধ করে আমাকে পুজো দিতে দেওয়া হল না। বিজেপি ও শান্তনু ঠাকুর মিলে এই কাজ করেছে। আমি তার জবাব দেওয়ার দায়িত্ব এখানকার জনগণকে দিয়ে রাখলাম।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ঠাকুরবাড়ি কারও একার সম্পত্তি নয়।’’
শনিবার বনগাঁ ও গাইঘাটায় রোড-শো করেন অভিষেক। তার পরেই ঠাকুরবাড়ি যাওয়ার কর্মসূচি স্থির হয়। এরপরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঠাকুরনগরের পরিস্থিতি। মূল মন্দিরের সামনেই মতুয়াদের দুই পক্ষের বচসা, ধাক্কাধাক্কি বাধে । মূল মন্দিরে পুলিশি প্রহরা দেখে প্রশ্ন তোলেন সাংসদ শান্তনু। জানাতে চান, কেন এত পুলিশি বন্দোবস্ত করা হয়। সূত্রের খবর, পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রীকে জানানো হয়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক আসবেন, তাই এখানে পুলিশি নিরাপত্তা জোরালো করা হয়েছে। অভিষেককে মন্দিরের ভেতরে ঢুকতে দেবেন না বলে, হুঁশিয়ারিও দেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা মতুয়া মহাসঙ্ঘের নেতা শান্তনু ঠাকুর। মন্দিরে ঢুকতে না পেরে মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে অভিষেক বলেন, ‘ধর্মকে সামনে রেখে যাঁরা রাজনীতি করছে, তাঁদের পতন অনিবার্য।’