দিল্লি, ১০ জুন – আমাজানের গভীর জঙ্গলের মাঝে সবার চোখের আড়ালে ভেঙে পড়েছিল একটি বিমান। সওয়ারি ছিলেন ৭ জন। ভাঙা বিমানের পাশ থেকেই তিনজনের মৃতদেহ মিললেও বাকি চার শিশুর খোঁজ মেলেনি। জনবসতি থেকে বহু দূরে বিমানটি ভেঙে পড়ায়, সেটি খুঁজে পেতেও কষ্ট করতে হয় কলম্বিয়ার প্রশাসনকে। বাকি চার শিশুর যে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি, তা নজরে আসার পর থেকেই শুরু হয় জোরদার তল্লাশি। ঘন জঙ্গলের মধ্যে শিশুদের খোঁজে প্রায় ৫ সপ্তাহ ধরে তল্লাশি চালানোর পর ওই নিখোঁজ চার শিশুকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে সেনাবাহিনী। ৪০ দিন পর ঘন জঙ্গল থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে চার শিশুকে।
শনিবার কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুসতাভো পেদ্রো টুইট করে ওই চার শিশুর উদ্ধার হওয়ার খবর প্রকাশ করেন। টুইট করে প্রেসিডেন্ট লিখেছেন, ‘গোটা দেশের জন্য আনন্দের খবর।’ তাঁর প্রকাশ করা ছবিতে দেখা যাচ্ছে, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ওই চার শিশুর ছবি। এভাবেও যে বেঁচে থাকা যায়, ওই শিশুরা সেই দৃষ্টান্তই স্থাপন করল বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট।
গত ১ মে আমাজ়নের জঙ্গলে ভেঙে পড়ে ছোট যাত্রীবাহী বিমান ‘সেসনা ২০৬’। ওই বিমানে ছিলেন চার শিশু, তাদের মা গত ১ মে আমাজ়নের জঙ্গলে ভেঙে পড়েছিল ছোট যাত্রীবাহী বিমান ‘সেসনা ২০৬’। ওই বিমানে ছিলেন চার শিশু, তাদের মা এবং দু’জন পাইলট। বিমানটি জঙ্গলে ভেঙে পড়ার পর শিশুদের মা এবং দুই পাইলটের দেহ পাওয়া গেলেও শিশুগুলির দেখা মেলেনি। অবশেষে দেখা মিলল তাদের। শিশুগুলির দাদু ফিদেনসিও ভ্যালেন্সিয়া সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছেন, দ্রুত তাঁর একটা হেলিকপ্টারের প্রয়োজন, যাতে তিনি ওই চার জনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসতে পারেন। তবে এই বিষয়ে কলম্বিয়া সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে সরকারি একটি সূত্র। বিমানটি জঙ্গলে ভেঙে পড়ার পর শিশুদের মা এবং দুই পাইলটের দেহ পাওয়া গেলেও শিশুদের দেখা মেলেনি।
উদ্ধার হওয়া শিশুরা হল ১৩ বছরের লেসলি জ্যাকম্বেয়ার মুকুটি, ৯ বছরের সোলেনি জ্যাকম্বেয়ার মুকুটি, ৫ বছরের টিয়েন রানক মুকুটি ও ক্রিস্টিন রানক মুকুটি নামে আরও এক শিশু। জানা গেছে, ইঞ্জিনের সমস্যার জেরে গত ১ মে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে ওই সিঙ্গল ইঞ্জিনের বিমানটি। বিমানে মোট ৭ জন যাত্রী ছিলেন। আমাজনের অরণ্যে সেই ভেঙে পড়া বিমানের খোঁজ মেলে গত ১৬ মে। শিশুদের মা ও বিমানের চালক সহ মোট তিনজনের দেহ উদ্ধার হয় ঘটনাস্থল থেকে। কিন্তু শিশুদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। ৪০ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর তাদের বাঁচার আশা আর নেই বলেই মনে করেছিলেন অনেকে। তা সত্ত্বেও চলে তল্লাশি চালানো হয়। অবশেষে মেলে অভাবনীয় সাফল্য। সব বাধা ও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে চার শিশুর দীর্ঘ লড়াই ইতিহাস মনে রাখবে।