• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

দুর্ঘটনার অভিঘাতে ভয়ার্ত, শোকার্ত যাত্রীরা শোনালেন বিভীষিকাময় রাতের অভিজ্ঞতা 

বালেশ্বর, ৩ জুন –  শুক্রবার রাতে ওড়িশার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বালেশ্বরের দুর্ঘটনাস্থল যেন এক মৃত্যুপুরী। দুর্ঘটনাস্থল থেকে যাঁরা প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদের সামনে শুধুই হাহাকার, তাড়া করে বেড়াচ্ছে দুঃসহ স্মৃতি৷ ভয় আর  আতঙ্ক তাঁদের এমনভাবে গ্রাস করেছে যে তাঁরা কথা বলার পরিস্থিতিতেও নেই।   প্রথমে বিকট আওয়াজ , তারপর ঝাকুনি, এরপর শুধুই

বালেশ্বর, ৩ জুন –  শুক্রবার রাতে ওড়িশার ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। বালেশ্বরের দুর্ঘটনাস্থল যেন এক মৃত্যুপুরী। দুর্ঘটনাস্থল থেকে যাঁরা প্রাণে বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদের সামনে শুধুই হাহাকার, তাড়া করে বেড়াচ্ছে দুঃসহ স্মৃতি৷ ভয় আর  আতঙ্ক তাঁদের এমনভাবে গ্রাস করেছে যে তাঁরা কথা বলার পরিস্থিতিতেও নেই।  

প্রথমে বিকট আওয়াজ , তারপর ঝাকুনি, এরপর শুধুই অন্ধকার।  চারদিকে নিকষ-কালো অন্ধকার। কিছুই ধরা পড়ছিল না। মোবাইলের আলো জ্বালতেই  ভয়ঙ্কর সত্যের মুখোমুখি।   কোনক্রমে প্রাণে বেঁচে থাকা যাত্রীরা দেখতে পান দুটি ট্রেনের সংঘর্ষে একটি ইঞ্জিন অন্যটির মাথায়। কামরাগুলো ছিটকে পড়েছে চারধারে।  রেল ট্র্যাকে  রক্তের ধারা । ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন অনেকে। কারোর হাত বেরিয়ে রয়েছে, কারোর দেহ থেঁতলে গিয়েছে। গোঙানির আওয়াজ , অসহনীয় এক অভিজ্ঞতা। দুর্ঘটনার সময় ও তার পরের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে  কেঁপে উঠছিলেন বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এবং করমণ্ডল এক্সপ্রেসের যাত্রীরা । চির জীবন আতঙ্কের মত তাড়িয়ে নিয়ে যাবে।

যাত্রীদের একজন সঞ্জয় মুখিয়া৷ দুর্ঘটনার রাত পেরিয়ে কেমনভাবে সকাল হয়েছে তা তিনি নিজেও জানেন না ৷ আতঙ্কের ছাপ তাঁর চোখের ভাষায়৷ পেশায় দিনমজুর সঞ্জয় করমণ্ডল  এক্সপ্রেসে চেন্নাই যাচ্ছিলেন৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি তখন ট্রেনের শৌচাগারে ছিলেন৷ সেখানেই প্রবল ঝাঁকুনি অনুভব করেন৷ সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ঘটনার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ট্রেনের কামরা ওলটপালট খাচ্ছিল৷’’ দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পরেই দৈবক্রমে সঞ্জয়কে দেখে এগিয়ে আসেন উদ্ধারকর্মীরা৷ তাঁর চারপাশে তখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাত্রীদের ব্যাগ , জিনিসপত্র, দুমড়ে যাওয়া ইস্পাত, ট্রেনের কামরা৷ এপাশে ওপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নিথর দেহ৷

অন্ধ্রপ্রদেশের চিক্কামাগালুরু জেলার বাসিন্দা ৪১ বছরের জৈন শুক্রবার রাতে হাওড়াগামী বেঙ্গালুরু সুপারফাস্টের যাত্রীদের মধ্যে একজন। তাঁর ভাষায়, ‘তখন রাত সাড়ে প্রায় ৮টা। ট্রেনটা হঠাৎ থেমে যায়, তারপরই এক বিকট আওয়াজ ।  ট্রেনটি থামার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কোচের যাত্রীরা বুঝতে পারিনি  যে কোনও দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু লোকেরা যখন ট্রেন থেকে নামছে আমরা লক্ষ্য করি যে পিছনের কয়েকটি কামরা নেই। অন্ধকারে দুর্ঘটনার নানা ছাপ।  মোবাইল ফোনের টর্চ ব্যবহার করে ট্র্যাকে হাঁটতে শুরু করলাম। দুর্ঘটনাস্থলের কাছে গিয়ে দেখি ট্র্যাক রক্তে ভরা, মৃতদেহ ছড়িয়ে পড়ে রয়েছে। সেই দৃশ্য কখনই ভুলতে পারব না।’