দিনহাটা , ২ জুন – বাড়িতে ঢুকে মায়ের সামনে ছেলেকে গুলি করে খুনের ঘটনা ঘটল কোচবিহারের দিনহাটায় । নিহতের নাম প্রশান্ত রায় বসুনিয়া। তিনি বিজেপির মন্ডল সম্পাদক ছিলেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দিনহাটার শিমুলতলা এলাকায়। কোচবিহার-দিনহাটা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। তৃণমূলকে দায়ী করে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানান শুভেন্দু। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দলের কারণেই এই খুন।
দিনহাটার পুটিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শিমুলতলায় বিজেপির ২৩ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত রায় বসুনিয়া। শুক্রবার দুপুরে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। মায়ের কাছে দুপুরের খাবার খেতে চান। ছেলের খাবার নিয়ে আসতে না আসতেই এই ঘটনা ঘটে যায়। তিনি চোখের সামনে দেখেন দু’জন দু্ষ্কৃতী বাড়ির ভিতরে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছে। রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন প্রশান্ত। এরপরই ঘটনাস্থল ছেড়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
চিৎকার চেঁচামেচি, গুলির শব্দ শুনে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে চলে আসেন। প্রশান্তকে তড়িঘড়ি উদ্ধার করে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে জানান। কে বা কারা গুলি চালাল, তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহর দাবি, প্রশান্ত সমাজবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের ছত্রচ্ছায়ায় থেকেই অসামাজিক কাজকর্ম চালাতেন প্রশান্ত। বিজেপির অন্তর্দ্বন্দের কারণেই খুন হয়েছেন তিনি। যদিও তৃণমূলের অভিযোগ নস্যাৎ করে বিজেপি। বিজেপির তরফ থেকে স্থানীয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধেই অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে।পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করাতে খুন বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের।
দিনে দুপুরে বাড়িতে ঢুকে প্রকাশ্যে বিজেপি নেতাকে খুনের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। পরিবারের দাবি, যে যুবকরা ঘরে ঢুকেছিলেন, তাঁরা পরিচিত নন। আচমকা এই ঘটনায় হতভম্ব পরিবার।
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। স্পর্শকাতর এলাকা দিনহাটায় ভরদুপুরে বাড়িতে ঢুকে এভাবে গুলি করে খুনের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা।