• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

মণিপুরে ডাইঙ্গেলকে সরিয়ে রাজীব

ডিজি বদলের সিদ্ধান্তে বিপদ সংকেতই দেখছে মুখ্যমন্ত্রীর বীরেনের ঘনিষ্ঠরা ইমফল, ১ জুন– মণিপুর সফর শেষ করে দিল্লি ফিরতে না ফিরতেই প্রশাসনিক কর্তা বদল। বৃহস্পতিবার সকালে মণিপুরে চারদিনের সফর শেষ করে দিল্লি ফিরেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মণিপুর পুলিশের ডিজি বদলে দিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বর্তমান ডিজি পি ডাইঙ্গেলকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় দিল্লি থেকে পাঠানো

ডিজি বদলের সিদ্ধান্তে বিপদ সংকেতই দেখছে মুখ্যমন্ত্রীর বীরেনের ঘনিষ্ঠরা

ইমফল, ১ জুন– মণিপুর সফর শেষ করে দিল্লি ফিরতে না ফিরতেই প্রশাসনিক কর্তা বদল। বৃহস্পতিবার সকালে মণিপুরে চারদিনের সফর শেষ করে দিল্লি ফিরেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মণিপুর পুলিশের ডিজি বদলে দিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

বর্তমান ডিজি পি ডাইঙ্গেলকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় দিল্লি থেকে পাঠানো হল রাজীব সিংহকে। তিনি আধা সেনা সিআরপিএফের দিল্লির সদর দফতরে আইজি হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন। উত্তরভারতীয় এই অফিসার আদতে ত্রিপুরা ক্যাডারের আইপিএস। অর্থাৎ মণিপুরের নতুন ডিজি না রাজ্যের বাসিন্দা, না রাজ্য ক্যাডারের অফিসার। বর্তমান ডিজি ডাইঙ্গেলকে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের অতিরিক্ত সচিব পদে বদলি করা হয়েছে।

প্রশাসনিক মহলের খবর, সাম্প্রতিক হিংসায় ডিজির ভূমিকা নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নেননি বা পুলিশকে কাজে লাগাতে পক্ষপাতিত্ব করেছেন, এমন কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু শাহ তাঁকে সরালেন রাজ্যের চলতি পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ধরে নেওয়া যায়। 

ডাইঙ্গেল হলেন কুকি জনজাতির গোষ্ঠীর মানুষ। মণিপুরে চলতি সংঘর্ষে এক পক্ষ হল কুকিরা। তারা মূলত পার্বত্য মণিপুরের বাসিন্দা। অপরপক্ষ মইতেইরা হল তুলনামূলকভাবে রাজধানী ইম্ফল এবং লাগোয়া সমতল এলাকার বাসিন্দা। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং আর্থ-সামাজিকভাবে অগ্রবর্তী অংশ। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র দফতর রাজ্য পুলিশের মাথায় এমন একজন অফিসারকে বসালো যিনি রাজ্যের বাসিন্দাই নন। ফলে নতুন ডিজিকে নিয়ে মইতেই এবং কুকি, কোনও সম্প্রদায়েরই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ডিজি বদলের এই সমীকরণ চিন্তায় ফেলেছে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং’কে। তিনি মইতেই সম্প্রদায়ের মানুষ। সাম্প্রতিক গোলমালের আগে থেকেই বিজেপির কুকি বিধায়কেরা তাঁর কাজকর্মের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন। শুধু কুকিরাই নন, বীরেনের নিজের সম্প্রদায় মইতেই বিধায়কদের মধ্যেও মুখ্যমন্ত্রীর কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ আছে। মাস দুই আগে বিজেপির ছয়জন বিধায়ক সরকারি পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাঁরা সকলেই মইতেই সম্প্রদায়ের।

তবে বীরেনকে সরানো হলে তাঁর জায়গায় কুকিদের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করার সম্ভাবনা নেই। মুখ্যমন্ত্রী করা হবে মইতেই সম্প্রদায়েরই কোনও বিধায়ককে। সেই দৌড়ে এগিয়ে আছেন থোকহম রাধেশ্যাম সিং। তিনি মাস কয়েক আগেও মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের উপদেষ্টা ছিলেন। সেই পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তিনি বিদ্রোহী বিধায়কদের নিয়ে দিল্লি গিয়ে জেপি নাড্ডা, অমিত শাহদের রাজ্যের পরিস্থিতি এবং বীরেনের বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়ে আসেন। তারপর ৩ মে-র গোলমালের সূত্রপাত হয়েছে। যা এখনও পুরোপুরি থামানো যায়নি। মণিপুর সফরে অমিত শাহ পনেরো দিনের হিংসা বিরতির ডাক দিয়েছেন। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, এই পনেরো দিন মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য প্রশাসনেরও অগ্নিপরীক্ষা। প্রশাসন হিংসা থামাতে কতটা সক্ষম সেদিকেও নজর রাখবে দিল্লি। গোলমাল শুরুর পরই কেন্দ্র কুলদীপ সিং নামে আধা সেনার এক কর্তাকে মণিপুরের নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিয়োগ করে। এবার ডিজির দায়িত্বেও ভিন রাজ্যের অফিসারকে পাঠানো হল।