• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

মনিপুর হিংসার ঘটনায় রাজ্যের কাছে রিপোর্ট তলব সুপ্রিম কোর্টের 

দিল্লি , ১৭ মে – রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রশাসন চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। বুধবার মণিপুরের হিংসা সংক্রান্ত মামলায় একথা বলল  সুপ্রিম কোর্ট। প্রশাসকরা যাতে চোখ বন্ধ করে না থাকেন, আদালত তা নিশ্চিত করবে বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানায় । পাশাপাশি হিংসায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসন

দিল্লি , ১৭ মে – রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হলে প্রশাসন চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না। বুধবার মণিপুরের হিংসা সংক্রান্ত মামলায় একথা বলল  সুপ্রিম কোর্ট। প্রশাসকরা যাতে চোখ বন্ধ করে না থাকেন, আদালত তা নিশ্চিত করবে বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানায় । পাশাপাশি হিংসায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসন দেওয়ার বিষয়ে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তাও জানতে চায় সর্বোচ্চ আদালত।

বুধবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, সে রাজ্যের মেইতেই জনগোষ্ঠীকে তফসিলি জনজাতির তকমা দেওয়া নিয়ে মণিপুর হাই কোর্টের সিদ্ধান্তে তারা হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে একই সঙ্গে দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানায় , কুকি-সহ অন্য তফসিলি জনজাতিরা মণিপুর হাই কোর্টের একক বেঞ্চের এই সংক্রান্ত কোনও সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করতে পারে।

বুধবার বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসিমহা এবং বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালার বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ , “আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। সুপ্রিম কোর্ট শুধু এটুকুই নিশ্চিত করতে চায় যে, রাজনৈতিক প্রশাসকরা যেন এই পরিস্থিতিতে চোখ বন্ধ করে বসে না থাকেন।” মণিপুরের পাহাড়ি অঞ্চলে জনজাতি অধ্যুষিত গ্রামগুলিতে শান্তিরক্ষার জন্য রাজ্যের মুখ্যসচিবকে দায়িত্ব দিয়েছে আদালত। আদালতকে দেওয়া হলফনামায় মণিপুর সরকার জানিয়েছে, হিংসায় শিকার হওয়া অন্তত ৪৬ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাজ্য ছেড়ে অন্যত্র যেতে চাওয়া তিন হাজার মানুষকেও ফেরার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হয়েছে। বুধবার অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট নতুন করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে।

মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির তকমাভুক্ত করার দাবি এবং তার পাল্টা জনজাতি সং‌গঠনের মিছিল— গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত ছিল উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর। মণিপুর হিংসায় এখনও পর্যন্ত ৫০ জন মারা গিয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার। আগেই এই হিংসা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট।

প্রসঙ্গত ,  হিংসার রেশ কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে মনিপুর । রাজ্যের পরিস্থিতি আগের থেকে কিছুটা উন্নত হয়েছে।  তবে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বলেছে, রাজ্যের সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় এখনও অশান্তি চলছে।  শান্তি বজায় রাখতে সব রকম চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন, যে রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সর্বোতভাবে চেষ্টা চলছে । তিনি বলেন, জেলা পুলিশ এবং সিএপিএফ মোট ৩১৫ টি ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে। রাজ্য সরকার ত্রাণ ব্যবস্থার জন্য ৩ কোটি টাকার একটি তহবিল অনুমোদন করেছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৪৬ হাজার মানুষ সাহায্য পেয়েছেন। 

এর আগে ৮ মে শুনানির সময় প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ বলেছিল যে এটি একটি ‘মানবিক সংকট’। বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, ত্রাণ শিবিরে ওষুধ এবং খাবার ও পানীয়ের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করতে হবে। এর পাশাপাশি রাজ্যে ধর্মীয় স্থানগুলি যাতে সুরক্ষিত থাকে সেজন্য পদক্ষেপ করতে হবে ।

উল্লেখযোগ্যভাবে, মেইতেই সম্প্রদায়কে এসটি মর্যাদা দেওয়ার দাবির প্রতিবাদে কুকি সম্প্রদায় একটি সমাবেশ করার পরে ৩ মে, ১০টি পার্বত্য জেলায় হিংসা শুরু হয়। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, হিংসার বলি হয়েছেন ৭১ জন। সেই সঙ্গে ২৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। হিংসার ঘটনায় প্রায় ১৭০০ ঘর-বাড়ি পুড়ে গেছে।