• facebook
  • twitter
Thursday, 28 November, 2024

থেরাপিতে সেরে যেতে পারে মহাব্যাধি ক্যান্সারও 

স্তন-ক্যান্সারের একেবারে শেষ ধাপ অর্থাৎ স্টেজ ৪ এ ছিলেন জুডি পার্কিনসন। চিকিৎসকরা তার মৃত্যুর দিন ধার্য করে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তার আয়ু হতে পারে বড়জোড় আর মাস তিনেক। কিন্তু সেই জুডি বেঁচে আছেন আজ দুই বছর। আর এর চেয়ে বড় বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, তার শরীরে ক্যান্সারের আর কোনো লক্ষণই নেই। মার্কিন গবেষকরা বলছেন, নতুন ধরনের এক থেরাপি

স্তন-ক্যান্সারের একেবারে শেষ ধাপ অর্থাৎ স্টেজ ৪ এ ছিলেন জুডি পার্কিনসন। চিকিৎসকরা তার মৃত্যুর দিন ধার্য করে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, তার আয়ু হতে পারে বড়জোড় আর মাস তিনেক।

কিন্তু সেই জুডি বেঁচে আছেন আজ দুই বছর। আর এর চেয়ে বড় বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, তার শরীরে ক্যান্সারের আর কোনো লক্ষণই নেই।

মার্কিন গবেষকরা বলছেন, নতুন ধরনের এক থেরাপি আবিষ্কার হয়েছে। যেটির সহায়তায় জুডি বিস্ময়করভাবে বেঁচে আছেন। নতুন এই থেরাপি পদ্ধতিতে তার শরীরে ৯০ বিলিয়ন ক্যান্সার নির্মূলকারী রোগ প্রতিরোধক সেল পাম্প করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট বলছে, এই থেরাপিটি এখনো পরীক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে। তবে, এটিকে সব ধরনের ক্যান্সার চিকিৎসায়ই কাজে লাগানো সম্ভব।

ক্যান্সারকে পরাস্ত করা সেই জুডি বসবাস করেন আমেরিকার ফ্লোরিডায়। তাকে চিকিৎসকরা বলেছিলেন, শরীরের অন্যান্য জায়গায়ও ছড়িয়ে পড়েছে ক্যান্সার। তাই এটিকে প্রচলিত পদ্ধতিতে থেরাপি দিয়েও তার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা কম। তাছাড়া জুডির লিভারে টেনিস বল আকারের একটি বড় টিউমার ছিল।

জুডি বলছিলেন, থেরাপি নিতে শুরু করার সপ্তাহখানেক পর তিনি খেয়াল করলেন যে তার টিউমারটি আকার ছোট হয়ে এসেছে। এরপর আরো এক কি দুই সপ্তাহ থেরাপি নেওয়ার পর সেই টিউমারটি একেবারে মিলিয়ে যায় বলেও জানান জুডি।

এই থেরাপির পর যখন জুডির প্রথম পরীক্ষাটি হলো সেটির প্রতিবেদন হাতে পেয়ে তার আশপাশে থাকা হাসপাতালের সব কর্মচারীরা একযোগে লাফালাফি করছিল। সেই জুডিই এখন সুস্থ শরীরে নৌকা চালিয়ে জলপথে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ান।

লিভিং থেরাপি

এই থেরাপির ক্ষেত্রে রোগীর শরীর থেকেই সেল নিয়ে ‘লিভিং ড্রাগ’ প্রস্তুত করে সেন্টার অফ ক্যান্সার রিসার্চ। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউট’র প্রধান ড. স্টিভেন রোজেনবার্গ বলেন, নতুন এই থেরাপি পদ্ধতিটি পার্সোনালাইজড একটি চিকিৎসা। এটির কথাই এতোদিন মানুষ কল্পনা করতো। এই ইমিউন-থেরাপিতে মূলত রোগীর জেনেটিক এবনরমালিটিজ বা জিনের অস্বাভাবিকতাকে খুঁজে বের করা হয়। তারপর এর উপর ভিত্তি করে হয় পরবর্তী থেরাপির ব্যাবস্থা। জুডির ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।

পার্সোনালাইজড এই ইমিউন-থেরাপি এখনো পরীক্ষণ পর্যায়ে রয়েছে। বহুল ব্যাবহারের জন্য বাজারে ছাড়বার আগেই এটিকে আরো বেশ কিছু নিরীক্ষার ভেতর দিয়ে যেতে হবে। এই থেরাপিকে ক্যান্সার চিকিৎসায় একটি বিরাট বাঁক-বদল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। তাই এটিকে নিয়ে ড. রোজেনবার্গ বলছিলেন, ক্যান্সার চিকিৎসায় এই অভিনব থেরাপী পদ্ধতি একদমই একদমই নতুন। তাই এখনো তারা গবেষণা করে বিষয়টি আরো ভালোভাবে জানার চেষ্টা করছেন।

এই অভিনব চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে ব্রেস্ট ক্যান্সার নাউ এর গবেষণা পরিচালক ড. সাইমন ভিনসেন্ট বলছিলেন, নতুন এই গবেষনার ফলকে তিনি অত্যন্ত ‘উল্লেখযোগ্য’ বলে মনে করছেন।