কলকাতা , ৬ মে – বকেয়া মহার্ঘ্যভাতার দাবিতে আন্দোলন পা দিল ১০০ দিনে। বকেয়া ভাতার দাবিতে শনিবার দক্ষিণ কলকাতায় আলোড়ন তুলে দিল আন্দোলনকারীদের সংগ্রাম। সরকারি কর্মীদের মিছিল দক্ষিণ কলকাতার হরিশ মুখার্জি রোড দিয়ে এগিয়ে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে দিয়ে এগিয়ে যায়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে এলাকায় পুলিশি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
ডিএ-র দাবিতে শহিদ মিনারের নিচে অবস্থানে বসেছেন সরকারি কর্মীদের একাংশ। শনিবার সেই আন্দোলনের ১০০ তম দিন।মিছিলে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা থেকে কলকাতায় আসেন সরকারি কর্মীরা। স্লোগানে আর গানে হাজরা। শান্তি রক্ষা এবং আরও কয়েকটি শর্তে হরিশ মুখার্জি রোড ধরে মিছিলের অনুমতি দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। ওইদিন নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দুপুর ১টায় শুরু হয় মহামিছিল। শঙ্খধ্বনি দিয়ে হাজরা থেকে শুরু হয় মহামিছিল। পা মেলান সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সদস্যরা। যে রাস্তা দিয়ে মিছিল যাবে তার ঠিক পাশেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি। তাই কোনও অশান্তি যাতে না হয় সে কারণে রাস্তায় অতিরিক্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়। জায়গায় জায়গায় গার্ডরেল এবং জলকামানের ব্যবস্থা রাখা হয়। রাস্তায় মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশকর্মী।
ডিএ আন্দোলন নিয়ে বেশ কয়েক বার নানা মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, ‘‘আমরা তো ম্যাজিশিয়ান নই। টাকাটাও জোগাড় করতে হবে। অনেকে বলে, এটা পেলাম, ওটা দাও, এটা পেলাম, ওটা দাও। আরে যেটা পেলে সেটাকে ধরে রাখতে গেলে যে টাকার প্রয়োজন সেটা কোথা থেকে জোগাড় হবে? কেন্দ্রীয় সরকার টাকা দিচ্ছে না। বঞ্চনা করছে আর মিথ্যা কথা বলছে।’’ আবার কখনও বলেছিলেন, ‘‘টাকা আকাশ থেকে পড়বে না।’’
এ বার হাজরা মোড়ে মহার্ঘভাতা-র দাবিতে আন্দোলন করা সরকারি কর্মচারীদের মঞ্চে যান সেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আন্দোলনকারীদের তিনি বলেন, “আপনারা মারপিট করার কোনও কর্মসূচি নেবেন না।” রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় তিনি বলেন, “এরা নিষ্ঠুর, বর্বর, এরা যে কোনও সময় খুন করতে পারে। ট্রিগার হ্যাপি এরা।” তিনি আরও বলেন, “নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কারণ সবারই স্ত্রী-পুত্র, পরিবার, বাবা আছে। অনশন করে শরীর নষ্ট করলে চলবে না ।” তার পরেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে ‘টাইট’ করার উপায় বাতলান শুভেন্দু।
শুভেন্দুর কথায়, “আপনাদের হাতে কলম আছে। কলমের খাপ বন্ধ করলেই টাইট হবে।” ব্যাখ্যা করে শুভেন্দুর মন্তব্য, সরকারের সঙ্গে লাগাতার অসহযোগিতা করে গেলে সরকার সব দাবিদাওয়া মেনে নিতে বাধ্য হবে। তৃণমূল সরকারকে হটাতে ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক মঞ্চ থেকেও সকলকে আন্দোলনের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানান তিনি। এর আগেও শহিদ মিনারে ডিএ আন্দোলনকারীদের অবস্থানমঞ্চে গিয়ে টানা কর্মবিরতির ‘পরামর্শ’ দিয়েছিলেন শুভেন্দু। আইনি লড়াইয়ে তাঁদের পাশে থাকারও আশ্বাস দিয়েছিলেন। শনিবারও আন্দোলনকারীদের মঞ্চ থেকে সেই পাশে থাকার বার্তা দিলেন শুভেন্দু।