কলকাতা , ৪ মে – হাইকোর্টের রায়ে সাময়িক স্বস্তি পেলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। আদালত বিশ্বভারতীর নির্দেশের ওপর জারি করল অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ। তাঁর শান্তিনিকেতনের পৈতৃক বাড়ির ১৩ ডেসিমেল জায়গা ৬ মে-র মধ্যে খালি করে দেওয়ার কথা বলে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নিম্ন আদালতে শুনানি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্বভারতীর তরফে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলে জানিয়ে দিল বিচারপতি বিভাস রঞ্জন দের সিঙ্গল বেঞ্চ। নোটিসের ওপর দেওয়া হল অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ। হাইকোর্টের নির্দেশ, আপাতত কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। আগামী বুধবার নিম্ন আদালতে ওই মামলার শুনানি হবে ।
কয়েকদিন আগেই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের পৈতৃক ভিটের ১৩ ডেসিমেল জায়গা খালি করে দেওয়ার নোটিস দেওয়া হয়। ৬ মে-র মধ্যে ওই জায়গা খালি করার নোটিস দেয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অমর্ত্য সেন। ওই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা করেন তিনি। জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আর্জি জানানো হয়। বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্টে সেই মামলার শুনানি হয়।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে বীরভূমের নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সময় বেঁধে দেওয়ায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন অমর্ত্য সেন। আবেদনে তিনি জানান, ৬ মে অর্থাৎ শনিবারের পর কর্তৃপক্ষ তাঁর জায়গা কেড়ে নিতে পারে। তাঁর দাবি, সিউড়ি আদালত তাঁর আবেদনের গুরুত্ব বুঝতে পারেনি।
৬৯ পাতার আবেদনে অমর্ত্য সেন উল্লেখ করেছেন, শান্তিনিকেতনে এই ১.৩৮ একর জমির ওপর বাড়ি তৈরি করেন তাঁর বাবা আশুতোষ সেন। ৮০ বছর ধরে সেই বাড়িতেই বসবাস তাঁর পরিবারের। আচমকা চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১৩ ডেসিমেল জায়গা ছাড়ার নোটিস পান । অমর্ত্য সেনের আরও দাবি, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যে পদক্ষেপ করেছে, তা প্রতিহিংসা আর প্ররোচণার ফল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অবনতির কথা যাতে প্রকাশ্যে না আসে , সেই জন্যই তাঁর বিরুদ্ধে এই ধরনের পদক্ষেপ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন অমর্ত্য সেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতী দাবি করেছে, আশ্রমের ১৩ ডেসিমেল জায়গা বেআইনিভাবে দখল করে আছেন অর্থনীতিবিদ। সেই জায়গাই খালি করার নোটিস দেওয়া হয়েছে। বিশ্বভারতীর এই নোটিসের বিরোধিতা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে অবস্থানে বসার কথাও বলেছেন তিনি। বিশ্বভারতীর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আগামী ৬ ও ৭ তারিখ ধর্নায় বসবেন বিশিষ্টজনেরা। শুভাপ্রসন্ন, কবির সুমন, যোগেন চৌধুরীর মতো শিল্পীদের সেই প্রতিবাদ মঞ্চে দেখা যাবে।
কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, আগামী ১০ মে দুপুর দুটোয় এই মামলার শুনানি হবে।