এতটাও প্রত্যাশা করেনি দলের সমর্থকরা। রবিবার বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে লড়াই চালাবে ‘টাইগার’রা সেটা অনেকেই মনে করেছিলেন। কিন্তু, প্রােটিয়াসদের শক্তিশালী বােলিং লাইনআপকে পুরােপুরি ভেঙে চড়ে তছনছ করে দিয়ে রেকর্ড গড়ে ফেলবে বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সেটা বােধহয় কেউই আশা করতে পারেনি।
তবে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা যে অপ্রত্যাশিত কাজ করে ফেলেছে সেটাও নয়। কারণ শেষ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মধ্যে অনেক পরিবর্তন দেখা গিয়েছে, তারই একটা প্রমাণ দেখা গেল বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে উদ্বোধনী ম্যাচে পরাজিত হওয়ার পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রবিবার রাউন্ড রবিন লিগের দ্বিতীয় ম্যাচে টসে জিতে ফ্যাপ দ্যু প্লেসিস টসে জিতে প্রথমে বাংলাদেশ দলকে ব্যাটিং করার জন্য আহ্বান জানান।
ব্যাট করতে নেমে সৌম্য সরকারের ৪২, সাকিব ৭৫, রহিমের ৭৮ ও শেষদিকে মহম্মদুল্লার অপরাজিত ৩৩ বলে ৪৬ রানের উপর ভর করে বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপের আসরে সর্বোচ্চ রান তুলে ফেলে ছয় উইকেটে ৩৩০ রান। টসে হেরে প্রথম ব্যাট করতে নেমে সাকিব-রহিমের তৃতীয় উইকেটে রেকর্ড ১৪২ রানের পার্টনারশিপের উপর ভর করে বিশ্বকাপের আসরে ছয় উইকেটে ৩৩০ রান তুলে রেকর্ড সর্বোচ্চ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ।
এর আগে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বাংলাদেশ দল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ রান তুলেছিল ছয় উইকেটে ৩২৯ যা এদিন ভেঙে গেল। বাংলাদেশের সমর্থকরা রবিবার ছুটির দিনে তাদের দলের থেকে একটা ভালাে খেলা উপহার পাওয়ার জন্য স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয়েছিলেন। আর তারা পুরােপুরি মুগ্ধ হয়ে গেলেন দলে ব্যাটসম্যানদের অসাধারণ ব্যাটিং পারফরমেন্স দেখে।
দ্যু প্লেসিস টসে হেরে প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন তাঁর দলের বােলারদের উপর পুরােপুরি ভরসা করে। প্রােটিয়াস অধিনায়ক আশা করেছিলেন তাঁর বােলাররা ইংল্যান্ডের ম্যাচে হারের ধাক্কা পুরােপুরি ভুলে গিয়ে নিজেদের সেরা খেলাটা মেলে ধরে বাংলাদেশ দলকে কম রানের মধ্যে বেঁধে ফেলবে। কিন্তু, কে জানত অধিনায়কের চিন্তা-ভাবনা পুরােপুরি ভুল প্রমাণ করে দেবে তাঁর দলের বােলাররা। কাজের কাজটা তারা কিছুটা করে দেখাতে পারলেন না।
আমলার জায়গায় এদিন দলে আনা হয় মারকরমকে। ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের সামনে পুরােপুরি মাথনত করে ফেলে প্রােটিয়াস বােলিং লাইনআপ। শুরু থেকেই ওপেনার সৌম্য সরকারের ব্যাটিং আক্রমণের সামনে পড়ে প্রােটিয়াস বােলাররা পুরােপুরি হিমসম খেয়ে যাচ্ছিল। এখানে বলাই বাহুল্য, বােলিং আক্রমণে স্টেইনগান ছাড়া প্রােটিয়াসদের বােলিং লাইনআপ যে পুরােপুরি দূর্বল সেটা প্রমাণিত। কারণ ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দুটি ম্যাচেই প্রােটিয়াস বােলাররা বিপক্ষ দলকে তিনশাের গন্ডি টপকে যাওয়া থেকে আটকাতে পারল না।
এদিকে চোট সারিয়ে তামিম সেভাবে খেলাটা মেলে ধরতে না পারলেও, সৌম্যর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ভর করে প্রথম উইকেটে ষাট রানের পার্টনারশিপ গড়ে ফেলে দু’জনে। তামিম ষোলাে রানে আউট হয়ে যাওয়ার পর সৌম্যও ব্যক্তিগত বিয়াল্লিশ রান করে আউট হয়ে যায়। তবে তৃতীয় উইকেটে সাকিবের ৭৫ ও রহিমের ৭৮ রানের উপর ভর করে বাংলাদেশ ভালাে জায়গায় পৌঁছে যায়। শেষদিকে মহম্মদুল্লার অপরাজিত ৪৬ রানের উপর ভর করে বাংলাদেশ বিশ্বকাপের আসরে সর্বোচ্চ রান তুলে ফেলে ছয় উইকেটে ৩৩০।
৩৩১ রানের বিরাট লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে ডি কক ২৩, মারকরম ৪৫ ও দ্যু প্লেসিস ৬২ রান করে আউট হয়ে যান। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিনিংস শেষ হয় ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রানে। মুস্তাফিজুর রহমান তিনটি উইকেট নিয়েছে।