• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

৯ সদস্যকে টিকিট দিয়েও পরিবারের বাকিদের দাবি মেটাতে হাবুডুবু দেবগৌড়া

বেঙ্গালুরু, ৪ এপ্রিল– ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই হাবুডুবু কর্ণাটক। হাবুডুবু টিকিট প্রত্যাশীর চাহিদা মেটাতে। সবে দিন সাতেক হল নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়েছে। যদিও সব দলই প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছিল মাস দুই তিন আগেই। তবে সব দলকে ছাপিয়ে গিয়েছে রাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম পার্টি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার দল জনতা দল সেকুলারের গোলমাল। গোলমাল খোদ জেডিএস পরিবারে।

বেঙ্গালুরু, ৪ এপ্রিল– ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হতেই হাবুডুবু কর্ণাটক। হাবুডুবু টিকিট প্রত্যাশীর চাহিদা মেটাতে। সবে দিন সাতেক হল নির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়েছে। যদিও সব দলই প্রার্থী বাছাইয়ের কাজ শুরু করে দিয়েছিল মাস দুই তিন আগেই। তবে সব দলকে ছাপিয়ে গিয়েছে রাজ্যের তৃতীয় বৃহত্তম পার্টি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার দল জনতা দল সেকুলারের গোলমাল। গোলমাল খোদ জেডিএস পরিবারে।

গোল বেধেছে দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার পরিবার নিয়েই। জনতা দল সেকুলার সংক্ষেপে জেডিএস নামে পরিচিত হলেও কর্নাটকে তা আসলে একটি পরিবারকেই বোঝায়। ৮৯ বছর বয়সি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর রাতের ঘুম ছুটে যাচ্ছে টিকিট নিয়ে পারিবারিক দ্বন্দ্বের মীমাংসা করতে। দু’-দু’বার পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসেও সমস্যা মেটাতে পারেননি। বরাবরের মতো এবারও বিধানসভা ভোটে দেবগৌড়ার পরিবারের নয় নয় করে সাতজন ভোটে লড়বেন। দেশের কোথাও কোনও দলে যার নজির নেই। দেবগৌড়া হার মানিয়েছেন লালুপ্রসাদ যাদবকেও।

গোল বেঁধেছে আসন নিয়ে। আর তার জেরে বাকিদের টিকিট কারও আরএসি, তো কারওটা ওয়েটিং লিস্ট বন্দি হয়ে আছে। শেষ পর্যন্ত টিকিট মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ের মুখে কেউ কেউ বিজেপি ও কংগ্রেসের দিকে পা বাড়িয়েছেন। গতবার জেডিএসের জেতা ৩৭ আসনের মধ্যে ২৬টির প্রার্থী ঘোষণা করেছে দল। বাকিগুলির প্রার্থীদের নাম প্রকাশ থমকে আছে পারিবারিক বিবাদেই।

আসন নিয়ে খেয়োখেয়ির মূলে আছে দক্ষিণ কর্নাটকের হাসন কেন্দ্রটি। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে দেবগৌড়া ছিলেন এই কেন্দ্রের বিধায়ক। তারপরও বহুদিন হাসন ছিল গৌড়া পরিবারের দখলে। গতবার বিজেপি আসনটি ছিনিয়ে নেয়। প্রশ্ন উঠেছিল, হাসনই যদি গৌড়া পরিবারের হাতছাড়া হয়ে যায় তাহলে দেবগৌড়ার অবর্তমানে জেডিএসের ভবিষ্যৎ কী।

স্বভাবতই গৌড়া পরিবার এবার হাসন পুনরুদ্ধারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিবাদ বেঁধেছে দেবগৌড়ার আসনে এবার পরিবারের মুখ কে হবেন। দেবগৌড়া নাম প্রস্তাব করেন ভবানী রেভান্নার। তিনি দেবগৌড়ার বড় ছেলে প্রাক্তন মন্ত্রী এইচডি রেভান্নার স্ত্রী। কিন্তু দলের অন্যতম মুখ তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচডি কুমারস্বামী কিছুতেই হাসনে বৌদিকে মানবেন না। তাঁর বক্তব্য, হাসন পুনরুদ্ধারের ভার তিনি দিতে চান ছেলে নিখিলকে।

সমস্যা মেটাতে দেবগৌড়া গত রবি ও সোমবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেঙ্গালুরুর বাড়িতে বৈঠক করেন। কিন্তু বরফ গলেনি। কুমারস্বামী হাসনে তাঁর ছেলেকে প্রার্থী করতে মরিয়া। অন্যদিকে, দেবগোড়ার বড় বউমা ভবানী জানিয়ে দেন, দলের টিকিট না পেলে তিনি নির্দল প্রার্থী হবেন। তিনি হাসন জেলা পরিষদের সদস্য। তাঁর বক্তব্য, ঘর-সংসার সামলে আমি হাসন দেখভাল করেছি। প্রতিদান না পেলে প্রতিশোধ নেবই।

দেবগৌড়া আসলে ব্যক্তিগতভাবে বড় ছেলে ও ছেলেবউ এবং দলের ব্যাপারে কুমারস্বামীর উপর নির্ভরশীল। বেঙ্গালুরুতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জন্য বরাদ্দ সরকারি বাংলোতেই থাকেন তাঁর বড় ছেলের পরিবারও। বাবা-মা’কে দেখভালের দায়িত্ব বড় ছেলেই নিয়েছেন। কিন্তু কুমারস্বামীর রাজনৈতিক ওজন বেশি।

প্রথমে ঠিক হয়েছিল কুমারস্বামী মধ্য কর্নাটরের চেন্নাপাটনা থেকে লড়াই করবেন। তাঁর দাদা প্রার্থী হবেন হোলেনারাশিপুরায়। কুমারস্বামীর ছেলে নিখল লড়বেন রামানগর কেন্দ্র থেকে। কুমারস্বামীর প্রস্তাব ছিল হাসনে এবার পরিবারের বাইরের কাউকে টিকিট দেওয়া হোক।

তাঁর যুক্তি, জেডিএস মানেই দেবগৌড়া পরিবার, এই ধারণার বদলের জন্য হাসন কেন্দ্র পরিবারের বাইরের কাউকে প্রার্থী করা দরকার। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে ইতিমধ্যেই বসে এসেছেন, জেডিএস মানে গৌড়া পরিবার। পরিবারবাদীদের আর ভোট নয়। দলকে প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন কুমারস্বামী। কিন্তু বৌদি প্রার্থী হবেন শুনেই কুমারস্বামী পাল্টা দাবি তুলেছেন হাসন দেওয়া হোক তাঁর ছেলেকেই।

গোল বেঁধেছে দেবগৌড়ার বড় দুই নাতি প্রাজওয়াল এবং সুরজও টিকিট চেয়ে বসায়। প্রথমজন বর্তমানে জেডিএসের সাংসদ। দ্বিতীয়জন বিধান পরিষদের সদস্য। কিন্তু দু’জনেই দাদুর কাছে আবদার করেছেন বিধানসভার টিকিট চাই। এই খবর জানাজানি হতে কর্নাটকে অনেকেই বলাবলি করছে দেবগৌড়ার পরিবারের বোধহয় মনে করছে এবার জেডিএস সরকার গড়বে। তাই মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রী হওয়ার লক্ষ্যে টিকিট এবং আসন নিয়ে পরিবারের মধ্যেই এমন কামড়াকামড়ি শুরু হয়েছে। তার উপর কুমারস্বামীর স্ত্রী-সহ পরিবারের আরও তিনজনের আসন এখনও স্থির করা যায়নি।