পাটনা, ১৫ মার্চ– তিনজনই একটা সময় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের অত্যন্ত কাছের মানুষ ছিলেন। আবার তিনজনই বর্তমানে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর তীব্র বিরোধী। বস্তুত বিজেপির থেকেও চড়া সুরে নীতীশের বিরোধিতায় অবিচল এই তিন নেতা। এই তিন নেতা হলেন চিরাগ পাসোয়ান, উপেন্দ্র কুশওয়া এবং মুকেশ শাহনি। আর এই তিন নেতারই নিরাপত্তা জোরদার করল কেন্দ্রীয় সরকার।
বিহারে হঠাৎ করেই এই তিন নেতাকেই অমিত শাহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জেড ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন থেকে চারজন এনএসজি কমান্ডো সহ ২২ জন কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীর জওয়ান ঘিরে রাখবে তাঁদের। অমিত শাহের সিদ্ধান্তের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পেতে চলেছেন এই তিন নেতা।
ওই রাজ্যে এখন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ এবং উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের জন্য জেড প্লাস নিরাপত্তা বরাদ্দ। সরকারিভাবে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা মনে করছেন এই তিন নেতা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হতে পারেন। তাই রাজ্য সরকারের নিরাপত্তার ভরসায় না থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হল।
আসলে বিজেপির এই তিন নেতার নিরাপত্তা বাড়ানো নিয়ে বিরোধীদের মত, আসলে নীতীশকে নাস্তানাবুদ করতে এই তিন নেতা বিজেপির তিন অস্ত্র। তাঁদের ভোট ব্যাঙ্ককে হাতিয়ার করে বিজেপি প্রমাণ করতে মরিয়া, নীতীশ কুমারকে ছাড়াই তারা বিহারের দখল নিতে পারে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না হলেও এই তিন দলকে নিয়ে বিজেপি বিহারে লালু প্রসাদ, নীতীশ কুমারদের মহাজোটের বিরুদ্ধে পাল্টা জোট গড়তে চাইছে। মহাজোটের শরিকদের দিকেও নজর আছে বিজেপির। আগামী মাসে অমিত শাহের বিহার সফরে আনুষ্ঠানিকভাবে জোটের ঘোষণা করা হতে পারে।
নিরাপত্তা বাড়ানো তিন নেতার অন্যতম চিরাগ হলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরিজন নেতা রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্র। রামবিলাস মারা যাওয়ার পর তাঁর তৈরি লোক জনশক্তি পার্টি ভেঙে রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পাটি (রামবিলাস) গঠন করেন চিরাগ।
বিজেপির লক্ষ্য এই তিন নেতার ভোট ব্যাঙ্ক, যা প্রায় ১২ শতাংশের কাছাকাছি। গেরুয়া শিবিরের অঙ্ক, হিন্দুত্বের রাজনীতির সঙ্গে জাতের সমীকরণ মেলানো। একদা নীতীশ সঙ্গী তিন নেতার ভোটকে সম্বল করে ২০২৪ – এ বিহারে বাজিমাত করতে প্রস্তুত হচ্ছে গেরুয়া শিবির।
২০১৯ এর ভোটে রাজ্যের ৩৯ আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ১৭টি আসন। নীতীশের দল জেডিইউ তখন বিজেপির জোট সঙ্গী ছিল। তারা পেয়েছিল ১৬টি আসন। অন্যদিকে, রামবিলাসের পার্টি পায় ছয়টি আসন। ২৪ এর ভোটে বিজেপির টার্গেট নীতীশের দলের হাতে থাকা ১৬ আসন।