নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর এবার মন্ত্রিসভা গঠনের পালা। ৩০ মে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মােদি। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন মন্ত্রী শপথ নিতে পারেন। কে কে মন্ত্রিসভায় স্থান পাবেন, তা স্থির করতে মঙ্গলবার পাঁচ ঘণ্টা বৈঠক করলেন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মােদি।
মন্ত্রিসভা নিয়ে ইতিমধ্যে জল্পনা-কল্পনা তুঙ্গে। একটি মহল থেকে শােনা যাচ্ছে, অসুস্থতার জন্য প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এবার মন্ত্রী নাও হতে পারেন। যদিও কিছুদিন আগে তাঁকে অর্থমন্ত্রকের শীর্ষ অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করতে দেখা গিয়েছে।
অমিত শাহ মন্ত্রী হতে পারেন বলে শােনা যাচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। যদিও বিজেপিরই অনেকে চাইছেন, তিনি এখনই কোনও মন্ত্রকের দায়িত্ব না নিয়ে পার্টির সংগঠনেরই দেখাশােনা করুন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতিভবনে শপথ নেবেন নরেন্দ্র মােদি। দ্বিতীয় বারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন। তাঁকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ভবনের দরবার হলে শপথ অনুষ্ঠান হওয়ার রীতি থাকলেও ২০১৪ সালে সেই রীতি ভেঙে শপথ অনুষ্ঠান হয় লনে।
বিজেপি সূত্রের খবর, শপথ অনুষ্ঠানে দেশ, বিদেশের বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত থাকবেন। রাজনীতিবিদ, রাষ্ট্রনেতা থেকে একাধিক সেলিব্রিটি। সূত্রের খবর, নরেন্দ্র মােদির শপথ অনুষ্ঠানে কংগ্রেস নেত্রী সােনিয়া গান্ধি এবং দলের সভাপতি রাহুল গান্ধি উপস্থিত থাকবেন। বিআইএমএসটিএসি অন্তর্ভুক্ত দেশগুলির থেকে নেতারা ছাড়াও মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী, কিরঘিস্তানের রাষ্ট্রপতি উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। থাকবেন দেশের স্বনামধন্য শিল্পপতিরা। অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের উপস্থিত থাকার সম্ভবনা রয়েছে। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত থাকছেন না শপথ অনুষ্ঠানে। বিজেপি একটি গণতান্ত্রিক অনুষ্ঠানকে রাজনৈতিক রং দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে টুইটারে অভিযােগ তুলেছেন মমতা।
বুধবার দুপুরে টুইট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের মতাে অনুষ্ঠানকে একটি দল রাজনৈতিক লাভ তােলার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে। বাংলায় ৫৪ জন যে বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন তাঁদের পরিবারকে মােদির শপথ অনুষ্ঠানে হাজির করানাের পরিকল্পনা বিজেপি করেছে তারজন্যই শপথ অনুষ্ঠান বাতিল করছেন তিনি তা টুইটারে স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
চলতি বছরেই মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড ও হরিয়ানায় নির্বাচন। আগামী বছরে ভােট হবে দিল্লি ও বিহারে। ওই রাজ্যগুলিতে জিততে পারলে আগামী দিনে রাজ্যসভায় গরিষ্ঠতা পেতে বিজেপির সুবিধা হবে। এই সময় দলের সংগঠনে পূর্ণ মনােযােগ দেওয়া প্রয়ােজন। সেজন্য অনেকেই চাইছেন, অমিত শাহ আরও কিছুদিন বিজেপির সভাপতির দায়িত্বে থাকুন।
স্বরাষ্ট্র, অর্থ, প্রতিরক্ষা ও বিদেশ মন্ত্রকে নতুন সাংসদদের মন্ত্রী করা হবে বলে শােনা যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, মােদি নজর রাখবেন এবারের মন্ত্রিসভায় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রতিনিধিরা যাতে থাকে। ওই রাজ্যগুলিতে গত লােকসভা ভােটে বিজেপি ভালাে ফল করেছে।
বিহারে বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ মিত্র লােক জনশক্তি পার্টি জানিয়েছে, তাদের দলের হয়ে মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্ব করবেন রামবিলাস পাসােয়ান। আগে রামবিলাস জানিয়েছিলেন, তাঁর ছেলে চিরাগ পাসােয়ান মন্ত্রী হলে খুশি হবেন। পরে চিরাগ নিজেই জানিয়েছেন, তিনি নন, মন্ত্রী হবেন তাঁর বাবা।