লােকসভা নির্বাচনে গান্ধিনগর থেকে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেই সময় থেকেই জল্পনা শুরু হয় শাহকে নিয়ে। কেন্দ্রে বিজেপি ফিরলে তবে কী শাহ মন্ত্রিত্ব পাবেন?
বিজেপির অন্দরে অমিত শাহর স্থান কোন জায়গায় তা সকলেই জানেন। হিসাব মতাে বিগ ফোরে অমিত শাহ থাকবেন সেটাই স্বাভাবিক। অনেকের ধারণা ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক পেতে পারেন শাহ। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের হাতেই আছে কেন্দ্রীয় গােয়েন্দা বাহিনী। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অমিত শাহর কূটনৈতিক বুদ্ধির সঙ্গে মানানসই হতাে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
রাজ্যসভার সাংসদ তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ গান্ধিনগর থেকে ৫.৫৭ লক্ষ ভােটে লােকসভা নির্বাচনে জয়ী হন। তারপরেই জল্পনা শুরু হয় কেন্দ্রের কোনও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক পেতে চলেছেন শাহ। প্রথমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে তিনি দায়িত্ব পাচ্ছেন বলে খবর পাওয়া গেলেও পরে অপর একটি মন্ত্রকের নাম জুড়ে যাওয়ায়। এর মধ্যে অর্থমন্ত্রক থেকে অরুণ জেটলি ছুটি নিতে চাওয়ায় তাঁর নাম আরও উজ্জ্বল হচ্ছে। তবে দলীয় সূত্রে কিছুই জানান হয়নি।
মঙ্গলবার নরেন্দ্র মােদি ও অমিত শাহের মধ্যে ৫ ঘন্টা ধরে ম্যারাথন বৈঠক হয়। সেখানে অনেকের নাম চূড়ান্ত হয়েছে তবে নামগুলি শপথের আগে প্রকাশ্যে আনা যাবে না বলে জানা গেছে। বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারের শীর্ষ সুত্রে খবর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক অমিতের লক্ষ্য নয়। বিজেপি সভাপতি হিসাবে তিনি গােয়েন্দা তথ্য পেয়ে থাকেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্ট অজিত ডােভাল শাহর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যােগাযােগ রাখেন। সেক্ষেত্রে শাহর পছন্দের দফতর অর্থ।
যেকোনও সরকারের কাছে অর্থমন্ত্রকের গুরুত্ব অনেক বেশি। দেশের অগ্রগতির মান নির্ধারিত হয় আর্থিক বিকাশের মধ্য দিয়ে। প্রথম এনডিএ সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন অরুণ জেটলি। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি কোনও মন্ত্রকের দায়িত্ব নিতে পারবেন না বলে মােদিকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন। পরবর্তী অর্থমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগের পছন্দ অমিত শাহকে।
অমিত শাহর মন্ত্রী হওয়া নিয়ে সঙ্ঘ পরিবারের পুরােপুরি মত নেই বলে সূত্রের খবর। সঙেঘর শীর্ষ কর্তাদের মতে, অমিত শাহর মন্ত্রী হওয়াই উচিত নয় সরকারের সঙ্গে দলের সংগঠনের ওজন এই প্রথম সমান সমান হল। বাজপেয়ী মানায় দলের তুলনায় সরকার ভারী ছিল।
অমিত শাহের নেতৃত্বে গত ৫ বছর যেভাবে দল পরিচালিত হয়েছে তাতে সরকারের সঙ্গে দলের ওজনে ভারসাম্য এসেছে। সংগঠন আগের তুলনায় অনেক মজবুত হয়েছে। অমিত শাহ সরকারে চলে গেলে সেই ভারসাম্য নষ্ট হবে বলে মনে করছে সঙঘ। তাছাড়া বিজেপিতে অমিত শাহের বিকল্প নেই যার হাতে দলের ভার দেওয়া যায়। নীতিন গড়কড়িকেও শাহর বিকল্প বলে মনে করছে না সঙ্ঘ পরিবার। মােদি, শাহ ও সঙঘ পরিবারের মধ্যে দড়ি টানাটানি গতকাল পর্যন্ত চলেছে। আজই সেটা স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।