• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

বেতন কমিশনের মেয়াদ আরও সাত মাস বাড়ল

সাত মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ। এবছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানাে হল এই বেতন কমিশনের মেয়াদ অর্থাৎ নজিরবিহীনভাবে পাঁচবার সময়সীমা বৃদ্ধি করে প্রায় সাড়ে চার বছর এক মাস বয়স দাঁড়াল ষষ্ঠ বেতন কমিশনের।

ষষ্ঠ বেতন কমিশনের বাস্তবায়ন দাবিতে পেনশনভোগীদের বিক্ষোভ প্রদর্শন (File Photo: IANS)

সাত মাস মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল ষষ্ঠ বেতন কমিশনের মেয়াদ। এবছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানাে হল এই বেতন কমিশনের মেয়াদ অর্থাৎ নজিরবিহীনভাবে পাঁচবার সময়সীমা বৃদ্ধি করে প্রায় সাড়ে চার বছর এক মাস বয়স দাঁড়াল ষষ্ঠ বেতন কমিশনের। সােমবার এই বেতন কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকে বিরােধী কর্মী ইউনিয়ন তাে বটেই, ক্ষোভ প্রকাশ পেল সরকারি কর্মী ইউনিয়নেও। এমনকী বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকারের পদত্যাগের দাবিও উঠল।

অভিরূপবাবুর নেতৃত্বে ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে গড়া হয় যষ্ঠ বেতন কমিশন। শেষ যেবার এই বেতন কমিশনের মেয়াদ বাড়ানাে হয়, তার সময় শেষ হয় রবিবার। এরপর সােমবার এই বেতন কমিশনের মেয়াদ বাড়ানাে হল। এই বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর থেকেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা।

শাসক দলের অনুগামী তৃণমূল কর্মচারী সংগঠন স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের মেন্টর গ্রুপের আহ্বায়ক মনােজ চক্রবর্তী বলেন, বছরের পর বছর এইভাবে কমিশনের মেয়াদবৃদ্ধির ফলে সরকারি কর্মচারীরা হতাশ। তাদের মধ্যে প্রতিবাদী মানসিকতা জন্ম নিচ্ছে। রাজ্য সরকার প্রতারণাকে বৈধ রূপ দেওয়ার জন্যই এইভাবে বেতন কমিশনের মেয়াদবৃদ্ধি করে চলেছে। বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকারের পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে শাসক অনুগামী কর্মচারী সংগঠনের পক্ষ থেকে।

মনােজ চক্রবর্তীর বক্তব্য, বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর না হলে কর্মচারীরা রাজ্য সরকারের দিকে থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারেন। শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে সরকারকে এখনই এই বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি দিতে অনুরােধ জানিয়েছেন মনােজবাবু।

বামেদের রাজ্য কর্মচারী সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজয়শংকর সিংহ বলেন, এই রাজ্যে সরকারি কর্মচারীদের ৪১ শতাংশ মহার্ঘভাতা বাকি। এরপর আবার বেতন কমিশনের মেয়াদ সাত মাস বৃদ্ধি করা হল। সরকার ক্লাবগুলিকে টাকা দিচ্ছে। উৎসবের খরচ করছে। মহার্ঘভাতা দেওয়ার বেলায় ঋণের দোহাই দিচ্ছে। সব রাজ্যেরও তো ঋণ রয়েছে। কিন্তু তারা মহার্ঘভাতা দিচ্ছে।

২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, মাইনে বাড়ানাে হবে। কিন্তু মাইনে বাড়ানাে তাে দূরস্থান, বকেয়া মহার্ঘভাতাই দিতে পারছে না। বিজয়শংকরবাবু জানান, আজ মঙ্গলবার টিফিনের সময় সারা রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ দেখানাে হবে। বাম সমর্থিত কর্মী কংগঠনের দাবি এই বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুক সরকার।

বিজেপি এবং কংগ্রেসের সরকারি কর্মচারী সংগঠনও একইভাবে ধিক্কার জানিয়েছে বেতন কমিশনের মেয়াদবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের। বিজেপি কর্মচারী সংগঠনের আহ্বায়ক দেবাশিস শীল জানান, লােকসভা নির্বাচনের ব্যালট পেপারে যেভাবে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে সরকারি কর্মচারীরা, তা থেকেই শিক্ষা নেয়নি সরকার। ৪২ টা কেন্দ্রের মধ্যে ৩৯ টাতেই বিজেপি প্রচুর ভােটে এগিয়ে রয়েছে তৃণমূলের থেকে। যা থেকে সরকারি কর্মচারীদের শাসক দলের প্রতি বিরূপ মনােভাব স্পষ্ট। তা সত্ত্বেও বেতন কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধি করল সরকার। ধিক্কার জানানাের কোনও ভাষা নেই। দেবাশিসবাবু জানান, সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করা হবে।

কংগ্রেসের কংগঠন কনফেডারেশনের তরফে সুবীর সাহা বলেন, রাজনীতির রং নির্বিশেষে ১০ লক্ষ কর্মচারীই এবার প্রতিবাদে পথে নামবে। বেতন কমিশনের কার্যালয় তথা অভিরূপ সরকারে অফিস ঘেরাও করা হবে বলে জানালেন সুবীরবাবু। লােকসভা ভােটের ফলাফল ঘােষণার পরপরই সমস্ত কর্মচারী সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ক্ষোভ প্রকাশিত হল।