ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত বলেছেন, ভারত ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ জেতার কথা কখনও ভাবেনি সেইজন্য বিমানে তাঁর টিকিট বুক করা হয়েছিল বােম্বাই থেকে নিউইয়র্ক পর্যন্ত। শুধু লন্ডনে সামান্য সময়ের জন্য একটি স্টপ ওভার ছিল।
১৯৮৩-তে ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন শ্রীকান্ত। তিনি বলেছেন, অধিনায়ক কপিলদেবের আত্মবিশ্বাস এবং তা দলের অন্য খেলােয়াড়দের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা ভারতের ঐতিহাসিক জয়ের অন্যতম কারণ।
শ্রীকান্ত বলেছেন, ১৯৮৩ সালে যখন আমরা ভারতের মাটি ছেড়ে রওনা হই তখন কখনােই আশা করিনি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হব। আইসিসি মিডিয়াকে শ্রীকান্ত বলেছেন, বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচে আমরা পূর্ব আফ্রিকাকে হারালেও তখনও টেস্ট দল না হয়ে ওঠা শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে যাই।
শ্রীকান্ত বলেছেন, কপিলদেবই সেবার বিশ্বকাপে তাঁর আত্মবিশ্বাস দিয়ে সবকিছু পাল্টে দেন যেটা আগে ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচের আগে আমরা গায়নাতে বার্বিসের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচ জিতেছিলাম। টুর্নামেন্ট শুরুর। আগে কপিল আমাদের বলেছিলেন যদি আমরা একবার ওদের হারিয়ে থাকতে পারি তবে আবার কেন নয়? আমাদের মনে হয়েছিল কপিল ঠাট্টা করছেন। কিন্তু তাঁর আত্মবিশ্বাস আমাদের নতুনভাবে চিন্তা করতে বাধ্য করেন জিম্বাবােয়ের বিরুদ্ধে কপিলের সেই ১৭৫ রানের ইনিংস আজও ভরতীয় ক্রিকেটে স্মরণীয় শুধু নয় একটি পর্বত সমান উচু ইনিংস হয়ে আছে।
সবুজ ঘাসে ঢাকা উইকেটে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিলাম সুনীল গাভাসকার এবং আমি নিজে। শূন্য রানে আউট হয়ে যাই। একসময় সতেরাে বানে পাঁচ উইকেটে চলে গিয়েছিল। কপিলদেব কিন্তু তাঁর বলিষ্ঠ হাতে ডিফেন্সিভ না খেলে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ব্যাটিং চালিয়েছিলেন। আমার স্ত্রী গ্যালারি থেকে নিচে নেমে আসেন। কপিল রান করতে শুরু করা মাত্রই আমরা ঠাণ্ডার মধ্যে খেলােয়াড়দের এনক্লোজারের ঠিক বাইরে এসে দাঁড়িয়েছিলাম। প্রত্যেকেই এত কুসংস্কারচ্ছন্ন ছিল যে আমরা জায়গা থেকে সরতে পারিনি।
ভারত তারপর অস্ট্রেলিয়াকে হারায় রজার বিনির দূর্দান্ত স্যুইং বলের দৌলতে। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারানাের নায়ক ছিলেন পার্ট টাইম বােলার মহীন্দর অমরনাথ। ফাইনালে আমার ৩৮ রানই ছিল দুটি দলের মধ্যে যে কোনও ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ রান। বিশ্বকাপ জেতার দিনটি থেকেই ভারতীয় ক্রিকেটে পরিবর্তন আসে। সেই পরিবর্তনের জের আজ আমাদের এখানে তুলে এনেছে।