দিল্লি, ৬ জানুয়ারি– অতীতে এরকম উদাহরণ নেই। দেশের দুই প্রথম সারির কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে সুপ্রিম কোর্টের তিরস্কার, “অতীত অভিজ্ঞতা বলছে ইডি বা সিবিআইয়ের হাতে কোনও মামলা যাওয়া মানেই সময় নষ্ট হওয়া। বছরের পর বছর সময় কেটে যায়। মামলার সমাধান হয় না। আজ পর্যন্ত ঠিক কটা মামলার যুক্তিযুক্ত সমাধান আপনারা করতে পেরেছেন?”
ওড়িশার এক চিটফান্ড মামলায় কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত নিয়ে একাধিক তাৎপর্যপূর্ণ পর্যবেক্ষণের পর ঠিক এই ভাষাতেই ইডি-সিবিআইকে দুষল শীর্ষ আদালত।
এই মামলাতেই বিচারপতি শাহ বলেন,”আমার অভিজ্ঞতা বলছে, যে সব আর্থিক প্রতারণা মামলায় সিবিআই এবং ইডি তদন্ত করে, সেই মামলাতেই তদন্ত ঢিলে হয়ে যায়। বছরের পর বছর কেটে যায়। এরপর বাধ্য হয়ে জামিন দিতে হয়। কটা আর্থিক কেলেঙ্কারির আপনারা যুক্তিযুক্ত সমাধান করেছেন” যদিও সিবিআইয়ের এই ঢিলেমির কারণ নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন বিচারপতি শাহ। তিনি বলেছেন,”হয়তো আপনাদের লোকবল কম। হয়তো পরিকাঠামো নয়। হয়তো সব আধিকারিক ব্যস্ত। কিন্তু আপনাদের কর্মপদ্ধতি বদলাতে হবে।” কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তিরস্কার করে বিচারপতি শাহ বলেন,”আপনারা এই ব্যাপারটিকে আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখুন। যারা নিজেদের কষ্টার্জিত টাকা খুইয়েছেন, তাদের কথা ভাবুন। আমরা টাকা উদ্ধার করতে চাই।” সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি।
উল্লেখ্য, বাংলার মতো ওড়িশার বহু সাধারণ নাগরিকও চিটফান্ড প্রতারণার শিকার। প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষ একাধিক চিটফান্ড সংস্থার দ্বারা প্রতারিত। প্রতারণার মোট অঙ্ক ১০ হাজার কোটি। সেই সব সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা ঠুকেছিলেন পিনাকপাণি মোহান্তি নামের এক ব্যক্তি। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এম আর শাহ এবং সিটি রবিকুমারের ডিভিশন বেঞ্চ ইডি সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছে, আজ পর্যন্ত ঠিক কটা আর্থিক প্রতারণা মামলার যুক্তিযোগ্য ফয়সলা করতে পেরেছে এই দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা? সিবিআইয়ের আইনজীবী এ প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য আদালতের কাছে সময় চেয়ে নিয়েছেন।