আমি দলের প্রত্যেকের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলাম। কিন্তু দলের সকলেই চায় আমি থাকি।
লােকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের হাতছাড়া হয় গতবারের জয়ী হওয়া বেশ কয়েকটি আসন। এরপরই কেন এই বিপর্যয়, তা নিয়ে আলােচনা করতে শনিবার কালীঘাটে দলের জয়ী এবং পরাজিত প্রার্থী সহ জেলা নেতৃত্বদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়ার ইচ্ছে প্রকাশের কথা জানালেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে ভােটে জিতেছে বিজেপি। নির্বাচন কমিশন প্রতিনিয়ত ওদের হয়ে কাজ করেছে। আমাদের আনসংখ্যা কমলেও ভােটের হার বৃদ্ধি পেয়েছে চার শতাংশ।
তৃণমূল আসার আগে রাজনৈতিক হিংসায় এক নম্বরে ছিল পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু এখন তা নয়। অথচ আমাদের বিরুদ্ধে প্রোপােগান্ডা করা হচ্ছে। তৃণমূলের যাঁরা বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে বিজেপির হয়ে কাজ করেছেন, তাঁদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমি এখনও বিশ্বাস করি, ঘুরে দাঁড়ানাের লড়াইতে নেতৃত্ব দেবে বাংলা। মানুষ ওদের বিশ্বাস করবে না। আমি ভবিষ্যদ্বাণী করছি না। কিন্তু মানুষের ওদের আসলটা বুঝতে একটু সময় লাগবে।
ইউনাইটেড ইন্ডিয়া নিয়ে কংগ্রেসের তরফে উদ্যোগের অভাব ছিল। আমি তো ওদের সাহায্য করতে চেয়েছিলাম। অন্যায়ের তদন্ত যাঁকে দিয়ে করাবাে, তাঁকেই সরিয়ে নিয়ে লােক বসিয়ে দিয়েছিল বলে বিজেপিকে নাম না করে খোঁচা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রশাসনের দখল নিতে এত ক্ষুধার্ত কেন বিজেপি?
আক্ষেপের সুরে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, মানুষের কাজ বেশি করে ফেলেছিলাম মনে হচ্ছে। সবাই দু’টাকা করে চাল পেয়েছে, চিকিৎসায় টাকা দিতে হচ্ছে না, লােডশেডিং নেই, চাষের জল তােলা যাচ্ছে, সরকারি কাজে আমি বেশি করে ফেলেছি। এখন থেকে দলকে বেশি সময় দেব। রেলমন্ত্রক ছাড়তে আমার এক মিনিট সময় লেগেছিল। চেয়ার আমার কাছে কিছু নয়। আমার চেয়ারকে প্রয়ােজন নেই। চেয়ারের আমাকে প্রয়ােজন।
নির্বাচন কমিশনকে কটাক্ষ করে বলেন, এই নির্বাচনের ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’। ওপেন গেম খেলছে ওরা। গণতন্ত্র টাকার কাছে বিকিয়ে গেলে, সেই গণতন্ত্র বিপর্যস্ত হয়ে যায়। এরকম আগে কখনও দেখিনি। আমি ইফতারে যাচ্ছি। একশােবার যাব। যে গরু দুধ দেয়, তার লাথি খাওয়া ভালাে।
তৃণমুলের ২০০ পার্টি অফিস দখল করে নেওয়া হয়েছে। সব পার্টি অফিস ফেরত নিতে টার্গেট দিয়ে দিয়েছি। ধর্ম নিয়ে প্রচার করা হয়েছে এই নির্বাচনে। আমরা অনেক অভিযােগ জানিয়েছি, কিছু হয়নি। এই নির্বাচনে যা টাকা খরচ করেছে, তা জানলে কেলেঙ্কারি হবে।