দার্জিলিং লােকসভা থেকে বিপুল ভােটে জয়ী হয়েছেন রাজু শ্রীবাস্তব।জলপাইগুড়ি থেকে জয়ী হয়েছেন ডাক্তার জয়ন্ত রায়।রায়গঞ্জ থেকে জয়ী হয়েছেন দেবশ্রী চৌধুরি।বালুরঘাট থেকে জয়ী হয়েছেন ড.সুকান্ত মজুমদার।এই চারজনকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় ঠাঁই দেওয়ার জন্য দাবি বা প্রস্তাব দেওয়া শুরু করলেন বিজেপির নেতা ও কর্মীরা।শুক্রবার বালুরঘাট , মালদা থেকে কোচবিহার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের সর্বত্র বিজেপির কর্মীরা গেরুয়া মিছিল করেন।জয় শ্রীরাম ধবনির সঙ্গে গেরুয়া আবির আর লাডডু নিয়ে বিজেপির কর্মীরা মিছিলগুলােতে হইহুল্লোড় করতে থাকেন। শিলিগুড়িতে জেলা-বিজেপির সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরির নেতৃত্বে বিজেপি কর্মীরা মিছিল বের করেন।মিছিল বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।সেই মিছিল থেকে অভিজিবাবু সকলকে গেরুয়া অভিনন্দন জানান।তিনি বলেন,তাদের সামনে লক্ষ্য শিলিগুড়ি পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদের পঞ্চায়েত বাের্ড দখল করা।
এরই মধ্যে শিলিগুড়িতে বিজেপির কর্মীরা এদিন থেকেই বলা শুরু করেছেন উত্তরবঙ্গ থেকে এবারে বেশি সংখ্যায় মন্ত্রী করা হলে সামনের নির্বাচনগুলােতে তৃণমূলকে আরও সাঁড়াশি আক্রমণ করা যাবে।সেই হিসাবে জলপাইগুড়ির বিজয়ী প্রার্থী ডাক্তার জয়ন্ত রায়কে উপ স্বাস্থ্য মন্ত্রী হিসাবে প্রজেক্ট করে বিজেপির কর্মীরা ভােট প্রচার শুরু করেছিলেন।সেই প্রজেক্টকে বাস্তবায়িত করবার পাশাপাশি দার্জিলিংয়ের রাজু বিস্টাকে বস্ত্র বা শিল্প মন্ত্রী , রায়গঞ্জের দেবশ্রী চৌধুরি এবং বালুরঘাটের ডঃ সুকান্ত মজুমদারকেও মন্ত্রী করবার প্রস্তাব দেওয়া শুরু করেছেন বিজেপির সাধারণ কর্মীরা।আবার ডুয়ার্স থেকে জন বারলার মন্ত্রী করবার দাবি উঠেছে।শিলিগুড়িতে বিজেপির মুখপাত্র কমল ঘােষ বলেন,উত্তরবঙ্গ থেকে অন্তত তিন জনকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতে স্থান দেওয়া হলে বেশ ভালাে হয়।শিলিগুড়িতে এদিন বিজেপির মিছিলে যােগ দেওয়া লােকজন বলছেন,দিদির পাশে এখনি সবসময় দশজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সবসময় ঘুরপাক খেলে তিনি চাপে থাকবেন আর তাতে দু বছর বাদে রাজ্য বিধানসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপির ক্ষমতায় আসতে সুবিধা হবে।দার্জিলিং যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ আসন তাই দার্জিলিংয়ের জয়ী প্রার্থী রাজু বিস্টাকে মন্ত্রী করা দরকার।আবার রায়গঞ্জে বিগত দিনের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সির স্ত্রী দীপা দাসমুন্সি বা হেভিওয়েট সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমকে পরাজিত করবার জন্য দেবশ্রী চৌধুরিকে মন্ত্রী করা যেতেই পারে। দেবশ্রী চৌধুরি উচ্চ শিক্ষিতা।বালুরঘাটের ডঃ সুকান্ত মজুমদারও শিক্ষিত এবং সজ্জন ব্যক্তি।পিছিয়ে পড়া দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতে ঠাঁই পেলে ওই জেলাতে বিজেপির পদ্মফুলের আসন সবসময়ের জন্য পাকা হয়েই থাকবে বলে সেখানকার মানুষ জানাচ্ছেন।এককথায় উত্তরবঙ্গ থেকে যেভাবে এবারে মানুষ পদ্ম ফুলকে উজাড় করে ভালােবাসা ঢেলে দিয়েছেন সেইভাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বেরও উজাড় করে উত্তরবঙ্গ থেকে বিজয়ী সাংসদদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতে ঠাঁই দেওয়া দরকার।এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে শিলিগুড়ি ঘােঘােমালি এলাকাতে বিজেপির কর্মীরা দলীয় কার্যালয় সাজাতে শুরু করেন।
সেখানে দাঁড়িয়ে বিজেপির সাত নম্বর মন্ডল সভাপতি শ্যামল সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সুন্দর সব নীতির জন্য আজ এই জয় এসেছে। শিলিগুড়িতে এখন থেকেই তারা পুরভােটে জয়ী হওয়ার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বেন। এদিন ওই এলাকাতে তুফান সাহার নেতৃত্বে বের হয় বিরাট মিছিল।শিলিগুড়িতে বিজেপির দুর্গা হিসাবে চিহ্নিত ঘােঘােমালি।সেখানকার শ্যামল সাহা সহ অন্যরা বলেন,ফল বের হতেই শিলিগুড়িতে কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলর তাদের সঙ্গে যােগাযােগ শুরু করেছেন।অনেক তৃণমূল কাউন্সিলর বলছেন,এবারে তৃণমূলকে হটাতে হবে।একই সঙ্গে তৃণমুলের কয়েকজন নেতাও এখন বিজেপির দিকে পা বাড়িয়েছেন।তাঁরা বলছেন ,তাঁদের বিজেপিতে নেওয়া হলে দিনরাত বিজেপির জন্য পরিশ্রম করবেন।বিজেপি নেতৃত্ব তাঁদের সেসব প্রস্তাব বিবেচনা করে দেখছে বলে জানা গিয়েছে।প্রসঙ্গত এই ভােটে শিলিগুড়ির সব ওয়ার্ডে পিছিয়ে পড়েছে শাসকদল তৃণমূল।মন্ত্রী গৌতম দেবের বিধানসভা ডাবগ্রাম ফুলবাড়িতেও পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল।