রায়পুর, ৩ ডিসেম্বর– দুয়ারে ভোট, তাই সব দল নেমে পড়েছে ভোটদাতাদের মন জোগাতে। সেই পথে বেশ কিছু রাজ্য সরকারের নতুন অস্ত্র সংরক্ষণ। ঝাড়খণ্ড, রাজস্থানে আগেই সংরক্ষণের আসন বৃদ্ধি করে জনগণকে লোভ দেখানো হয়েছে। এবার আরেক অবিজেপি দল শাসিত রাজ্য ছত্তীসগড়ও সংরক্ষণের নয়া রাজনীতিতে শান দিল । কংগ্রেস শাসিত ওই রাজ্যে চাকরি ও শিক্ষায় অনগ্রসর অংশের জন্য সংরক্ষণের কোটা বৃদ্ধি করে করা হল ৭৬ শতাংশ।
বিধানসভায় এই সংক্রান্ত বিল পাশ করিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল বিজেপিকে বিঁধে বলেন, আগের বিজেপি সরকার তিন দফা ক্ষমতায় থাকলেও এই ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করেনি। নতুন সংরক্ষণ নীতিতে জনসংখ্যার অনুপাতকে মানদণ্ড করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী ছত্তীসগড় পাবলিক সার্ভিস সংশোধনী বিল এবং ছত্তীসগড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশোধনী বিল পাশ করিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ঠিক এক বছর পর ছত্তীসগড়ে বিধানসভার ভোট। একই সময় রাজস্থানেও ভোট নেওয়া হবে। দুই রাজ্যের কংগ্রেস সরকারই যদি টিকিয়ে রাখতে চাকরি, শিক্ষাকে পাখির চোখ করেছে। তাই এই দুইয়ে সংরক্ষণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে জনগণকে নিজের দিকে টানার চেষ্টা করছে । রাজস্থান সরকার আগেই কোটা বৃদ্ধি করেছে। ঝাড়খণ্ডের পরবর্তী বিধানসভা ভোট আগামী বছরের শেষে অথবা ২০২৪-এর গোড়ায়।
নয়া বিলে বলা হয়েছে, তফসিলি উপজাতিরা ৩২ শতাংশ, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি ২৭ শতাংশ, তপশিলি জাতি ১৩ শতাংশ কোটার সুবিধা পাবে। অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল অংশের জন্য ৪ শতাংশ সংরক্ষণের বিধান করা হয়েছে।
তবে, বিধানসভায় বিল পাশ করালেই এই সংরক্ষণ কার্যকর করা যাবে না। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি নিতে হবে। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের রায় হল, সংরক্ষণের কোটা কখনই ৫০ শতাংশের বেশি হতে পারবে না। কিন্তু সংবিধানের নবম তফসিলে উল্লেখিত জনগোষ্ঠীগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ পরিস্থিতির বিচারে বাড়তি সংরক্ষণ অনুমোদনের ক্ষমতা সংসদের আছে।
কোটা বৃদ্ধির জন্য বাঘেল সরকার ২০১৯-এ একটি কমিটি গঠন করেছিল। করোনার কারণে কমিটি সময়মতো রিপোর্ট দিতে পারেনি। গতমাসে কমিটি রিপোর্ট দেওয়া মাত্র রাজ্য সরকার তা কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিল।
প্রসঙ্গত, গত মাসে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডও সংরক্ষণের কোটা বৃদ্ধি করে ৭৬ শতাংশ করেছে। ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনেরও দাবি, জনসংখ্যার অনুপাতেই বলবৎ হবে নয়া সংরক্ষণ।
বাঘেল তাই বলেন যে তিনি বিধানসভার স্পিকারের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করার জন্য সমস্ত দলের বিধায়কদের অনুরোধ করছেন। কেন্দ্রকে অনুরোধ করা হবে এই সংশোধনী বিল দুটিকে সংবিধানের নবম তফসিলের অধীনে তালিকাভুক্ত করার জন্য।
এখন দেখার নরেন্দ্র মোদীর সরকার অবিজেপি দল শাসিত রাজ্যের কোটা রাজনীতিতে সায় দেয় কিনা। কংগ্রেস ও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার দাবি, বিজেপি সরকার বিলগুলি আটকে দিলে রাজনৈতিকভাবে তাদের লোকসান তো নেই, বরং গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে আদিবাসী, তফসিলিদের সংঘবদ্ধ করা সহজ হবে।