• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

ঘনিষ্ঠ যুগলের ওপর আঠা ঢেলে কুপিয়ে, গলা কেটে খুন তান্ত্রিকের

জয়পুর, ২৩ নভেম্বর– বিবাহিত যুবক যুবতীর অবৈধ সম্পর্কের পরিবারের লোকজনকে জানিয়ে দিতেই এক তান্ত্রিককে শ্লীলতাহানির মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল যুবতী। আর সেই হুমকির প্রতিশোধ তান্ত্রিক যেভাবে নীল তা আঁতকে ওঠার মত। সমস্যা সমাধানের উপায় বাতলাতে যুবক-যুবতীকে তার সামনেই যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হতে বলে তাদের উপর আঠা ঢেলে গলা কেটে কুপিয়ে যুগলকে খুন করল

জয়পুর, ২৩ নভেম্বর– বিবাহিত যুবক যুবতীর অবৈধ সম্পর্কের পরিবারের লোকজনকে জানিয়ে দিতেই এক তান্ত্রিককে শ্লীলতাহানির মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল যুবতী। আর সেই হুমকির প্রতিশোধ তান্ত্রিক যেভাবে নীল তা আঁতকে ওঠার মত। সমস্যা সমাধানের উপায় বাতলাতে যুবক-যুবতীকে তার সামনেই যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হতে বলে তাদের উপর আঠা ঢেলে গলা কেটে কুপিয়ে যুগলকে খুন করল সেই তান্ত্রিক।

গত ১৫ নভেম্বর রাজস্থানের উদয়পুরে ঘটে এই ঘটনার কিনারা করার পর পুলিশের কর্তারাও যেন চমকে উঠছেন। অভিযুক্ত তান্ত্রিকের নাম ভালেশ কুমার। ৫৫ বছর বয়সি ওই তান্ত্রিক ভাদাবি গুদা এলাকার ইচ্ছাপূর্না শেষনাগ ভাবজি মন্দিরে গত ৭-৮ বছর ধরে থাকত। স্থানীয় বাসিন্দারা বিভিন্ন সমস্যার সমাধানের জন্য তার কাছে আসতেন। নিহত যুবক যুবতীর নাম রাহুল মিনা(৩০) এবং সোনু(২৮)।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোনু এবং রাহুল দুজনেই পৃথক পৃথকভাবে বিবাহিত ছিলেন। তাঁদের পরিবারের লোকজন ভালেশ কুমার নামে ওই তান্ত্রিকের কাছে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সেখানেই দেখা হয় রাহুল এবং সোনুর। অল্প দিনের মধ্যেই দুজনে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। এরপরেই স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তি করতে শুরু করেন রাহুল। দাম্পত্য কলহ থেকে মুক্তি পেতে ভালেশ কুমারের দ্বারস্থ হন রাহুলের স্ত্রী।

রাহুল এবং সোনুর সম্পর্কের কথা জানতে পেরে গিয়েছিল ভালেশ। পুলিশের অনুমান, সোনুর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছিল সে। তাই, রাহুলের স্ত্রী তার কাছে আসা মাত্রই দুজনের সম্পর্কের কথা তাঁকে জানিয়ে দেয় ভালেশ। এরপরেই রাহুলের বাড়িতে অশান্তি চরমে ওঠে। ভালেশ তাঁর স্ত্রীকে সবকিছু জানিয়ে দিয়েছেন জানতে পারার পরেই তিনি এবং সোনু ভালেশকে শ্লীলতাহানির মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেবার হুমকি দেন। তাতেই ভয় পেয়ে যায় ভালেশ। ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে এবং প্রতিশোধ নিতে দুজনকে খুন করার পরিকল্পনা করে সে।

পুলিশ জানিয়েছে, ভালেশ দুজনকে এমন ভাবেই খুন করার পরিকল্পনা করে, যাতে খুনের পর সকলে জেনে যায় দুজনের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তাতে তার উপর কারও সন্দেহ হবে না বলে মনে করেছিল সে। সেই মতোই সে দোকান থেকে ৫০ টিউব সুপারগ্লু, অর্থাৎ ভয়ানক ক্ষমতাসম্পন্ন আঠা কিনে আনে। তারপর সমস্ত আঠা একটা বোতলে ঢেলে রাখে।

এরপর রাহুল এবং সোনুকে নিকটবর্তী কেলাবাওয়াড়ির জঙ্গলে একটা ফাঁকা জায়গায় আসতে বলে সে। এরপর তাঁদের সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার উপায় হিসেবে দম্পতিকে তার সামনেই যৌনতায় লিপ্ত হতে বলে ওই তান্ত্রিক।

তার কথা মতো জঙ্গলের মধ্যেই যৌনতায় লিপ্ত হন রাহুল এবং সোনু। এরপরেই পরিকল্পনার মতো সঙ্গমরত দম্পতির ওপর বোতল থেকে সুপারগ্লু ঢেলে দেয় সে। তার ফন্দি ছিল, আঠায় আটকে মিলনরত অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হলে সন্দেহের তালিকা থেকে একেবারেই বাদ পড়ে যাবে সে।

কিন্তু আঠায় দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার পর রাহুল এবং সোনু পরস্পরের থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করতে শুরু করেন। আর তা করতে গিয়েই তাঁদের চামড়া ছিঁড়ে উঠে আসতে শুরু করে। রাহুলের যৌনাঙ্গ তাঁর দেহ থেকে ছিঁড়ে চলে আসে। সোনুরও গোপনাঙ্গ ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। সেই সময় তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ভালেশ। সে ছুরি দিয়ে গলার নলি কেটে খুন করে রাহুলকে। সোনুকেও কুপিয়ে খুন করে ওই তান্ত্রিক। এরপরেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায় সে। এই ঘটনার পর জঙ্গল থেকে দু’জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

প্রাথমিক তদন্তে বিষয়টিকে অনার কিলিং বলে অনুমান করেছিল পুলিশ। কিন্তু এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, পুরো ঘটনায় কোনও না কোনওভাবে জড়িত রয়েছে ভালেশ। এরপরেই তাকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসা করা শুরু করেন তদন্তকারীরা। জেরার মুখে ভেঙে পড়ে খুনের কথা স্বীকার করে ভালেশ।