কলকাতা,১৭ অক্টোবর —চলে গেলেন ওআরএস উদ্ভাবক ডা. দিলীপ মহলানবিশ। বিশ্বে ৭ কোটি মানুষের প্রাণ রক্ষাকর্তা ডা. দিলীপ মহলানবিশের জীবনাবশনে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ।
পেট খারাপ, বমি হলেই অবর্থ্য নুন-চিনির জল। ডিহাইড্রেশন হোক বা ডায়েরিয়া–সবচেয়ে আগে ওআরএস খাওয়ানোরই নিদান দেন ডাক্তারবাবুরা। হাসপাতালে ভর্তি, স্যালাইন ওয়াটার চালু অনেক পরের ব্যাপার–ধুঁকতে থাকা রোগীর কাছে মৃত সঞ্জীবনী হয়ে ওঠে ওআরএসই। এই ওআরএস যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত, সেই চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আবিষ্কারক ডা. দিলীপ মহলানবিশের জীবনাবসান হল। নানারকম রোগে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরেই। শনিবার রাতে কলকাতার ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে বনগাঁর একটি শরণার্থী শিবিরে কলেরা ভয়াবহ মহামারী হয়ে দেখা দেয়। সেই সময় স্যালাইন ওয়াটারের পর্যাপ্ত জোগান ছিল না। ডা. দিলীপ মহলানবিশ সেই সময় রিফিউজি ক্যাম্পে কলেরা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা করতে যান। তিনি তখন জনস হপকিন্স ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর মেডিকেল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ে গবেষণা করছেন। জন হপকিনস ইউনিভার্সিটির সাহায্যে ওরাল রিহাইড্রেশন সল্ট বা ওআরএস তৈরি করেন তিনি। শরণার্থী শিবিরের রোগীদের এই নুন-জল খাওয়াতেই ম্যাজিকের মতো কাজ হয়। সেই ১৯৭১ সাল থেকে আজ অবধি বিশ্ব জুড়ে কম করেও ৭ কোটি মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে ডা. মহলানবিশের তৈরি ওআরএস। এক লিটার জলে ৬ চামচ চিনি আর হাফ চামচ নুন–বাড়িতেই বানিয়ে ফেলা যায় ওআরএস । ১৯৭৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) স্বীকৃতি দেয় এই আবিষ্কারকে।