ঋণখেলাপিদের তথ্য দিতে নারাজ ব্যাংক
দিল্লি, ১৫ অক্টোবর– প্রায় ১.২৯ লক্ষ কোটির ঋণ ফেরত পাওয়ার কোন আশাই নেই কানাডা ব্যাঙ্কের।গত এগারো বছরে অনুৎপাদিত সম্পদ বা ‘ব্যাড লোন’ হিসেবে খরচের খাতায় ধরে রেখেছে ওই টাকা। আলাদা আলাদা ব্যক্তিকে পৃথক পৃথকভাবে দেওয়া এই বিপুল ঋণের অর্থ ফেরত পাওয়ার আর কোনও সম্ভাবনাই দেখতে পাচ্ছে না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। অথচ সেই ঋণ গ্রহণকারীদের তথ্য দিতে নারাজ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
পুণের আরটিআই কর্মী বিবেক ভেলানকরের জমা দেওয়া আরটিআইয়ের ভিত্তিতে এই তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। তবে ‘ব্যাড লোন’-এর আর্থিক অঙ্ক প্রকাশ করলেও এই ঋণ কে বা কারা নিয়েছিল, সেই সব নাম প্রকাশ করতে চায়নি কানাড়া ব্যাংক । এর কারণ হিসেবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের তরফে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে যে ঋণ গ্রহণকারীদের নাম প্রকাশ করলে তা ব্যক্তির গোপনীয়তা ভঙ্গের শামিল হবে, তাই সেটা করা অনুচিত। ভেলানকর অবশ্য আবেদন করেছিলেন ১০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ গ্রহণকারীদের নাম ঘোষণা করা হোক। কিন্তু রাজি হয়নি ব্যাংক।
১১ বছরে স্রেফ একটি ব্যাংকেই ঋণখেলাপির পরিমাণ ১ লক্ষ ২৯ হাজার কোটি। সবকটি ব্যাংক মেলালে এই অঙ্ক যে আকাশ ছুঁয়ে যাবে সেটা চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়। অথচ, এই ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হচ্ছে না। না সরকার, না ব্যাংক, কোনওপক্ষই এই অনাদায়ী ঋণ আদায়ের চেষ্টা করছে না।
বস্তুত, মোদি জমানার অন্যতম বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে এই ঋণখেলাপি। বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি থেকে শুরু করে মেহুল চোকসি পর্যন্ত বহু শিল্পপতিই মোটা অঙ্কের ঋণ নিয়ে ভারত ছেড়েছে গত কয়েকবছরে। সেটাই অস্বস্তি বাড়িয়েছে সরকারের। কিন্তু আরটিআইয়ের তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর দেখা যাচ্ছে, বারবার ঋণখেলাপির ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরও সতর্ক হয়নি ব্যাংকগুলি। কানাড়া ব্যাংকের শুধু যে বিপুল পরিমাণ ঋণ খেলাপ হয়ে গিয়েছে তাই নয়, তারা ঋণখেলাপিদের তালিকাও দিতে নারাজ।