ওয়াশিংটন, ২৯ সেপ্টেম্বর– একটা সময় বহু মানুষের প্রাণ নিয়েছে যৌনরোগ সিফিলিস বা গুপ্তরোগ । এই রোগে গত দুদশক ধরে তেমন সংক্রমণ বা মৃত্যু দেখা না গেলেও আচমকাই এই যৌনরোগ ভয়াল আকার নিয়ে ছড়াতে শুরু করেছে। বিশ্বের অন্তত ৩৩টি দেশে সিফিলিস রোগীর খোঁজ মিলেছে বলেই জানাচ্ছেন গবেষকরা।
নেচার মাইক্রোবায়োলজি বিজ্ঞান পত্রিকায় এই গবেষণার খবর ছাপা হয়েছে। লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষকরা একটি সমীক্ষা চালিয়েছেন। তাতে দেখা গেছে, সিফিলিস আবারও ভয়ঙ্কর আকার নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। পশ্চিম ইউরোপ, মধ্য এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা সহ ৩৩টি দেশে সিফিলিস রোগীর জিনোম পরীক্ষা করে দেখা গেছে তার মধ্যে ট্রেপোনেমা প্যালিডাম ব্যাকটেরিয়ার স্ট্রেন রয়েছে।
বিজ্ঞান বলছে, সিফিলিস হল রক্তবাহিত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। ট্রেপোনেমা প্যালিডাম ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এই রোগ ছড়ায়। যৌন সংস্পর্শ থেকে, চুম্বন, ওরাল সেক্স, দেহরসের মাধ্যমে জীবাণু এক শরীর থেকে অন্য শরীরে ছড়াতে পারে এই রোগ ।
তাছাড়া গর্ভাবস্থায় বা জন্মের সময় মার থেকে শিশুর, একই সূঁচ ব্যবহার করলে সংক্রমিত রক্ত থেকে রোগ ছড়াতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিকের এক বা একাধিক ডোজের মাধ্যমে সিফিলিস নিরাময় করা যায়। যত তাড়াতাড়ি এটির চিকিৎসা করা হবে, স্বাস্থ্যগত জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা তত কম হবে।
সাধারণত, এই রোগের লক্ষণ হল –
১) পুরুষাঙ্গে ছোটো ছোটো ফুসকুড়ি হয়, ঘা হতে পারে। মহিলাদের ক্ষেত্রে যোনিমুখে ঘা, জরায়ু মুখে ফুসকুড়ি ইত্যাদি দেখা যায়। ক্রমে ক্ষতস্থান শক্ত হয়ে ওঠে।
২) আক্রান্তকে চুম্বন করলে মুখে-ঠোঁটে ঘা হয়।
৩) প্রাথমিক ক্ষত সাধারণত নিজে থেকেই সেরে যায়। কিন্তু উপসর্গ না থাকলেও জীবাণু শরীরের ভিতরেই থেকে যায়। চিকিৎসা না করালে দ্বিতীয় পর্যায়ে সংক্রমণ বাড়ে ও নানারকম জটিলতা শুরু হয়ে যেতে পারে। রোগীর শরীর রুগ্ন এবং দুর্বল হতে থাকে। চর্মরোগ, শ্লেষ্মা, চোখ এবং স্নায়ুতে জীবাণু সংক্রমণ, জ্বর, গলায় ব্যথা, নিস্তেজ ভাব, হাত ও পায়ে ব্যাথা, রক্তাল্পতা, মাথা ব্যাথা, ওজন কমে যেতে পারে।